• Uncategorized
  • 0

গ এ গদ্যে রিতা মিত্র

ট্রেনিং

আমার ফ্ল্যাটের পুব দিকের জানালা দিয়ে সকালের রোদ ঢোকে। তাই সকাল বেলায় সেখানে বসে অনেকটা সময় যায় আমার।
যদিও জানালাটা পুব দিকে তবে সেদিকে দুটো দোতালা বাড়ি আছে। এই বাড়ি দুটোর পেছন দিক এটা। তাই সেখানে একটা বাড়ির পুরোটাই দেয়াল আর একটা বাড়ির একটা জানালা আছে তাও সেটা আমার জানালার মুখোমুখি নয়।
এই দুই বাড়ি মাঝের জায়গা দিয়ে ওঁ বিল্ডিং দেখা যায়।
একটা বাড়ির পেছনে একটা পেয়ারা গাছ আছে। সকাল হলে, চড়াই, দোয়েল, দূর্গা টুনটুনি ঝুটশালিখ এসে বসে। সারাদিন তাদের কিচিরমিচির শুনতে পাওয়া যায়। ছবিও তুলেছি বেশ কটা।
বেশ কয়েক সপ্তাহ আগে এমনি বসে ছিলাম। হঠাৎ জোর বৃষ্টি। জানালা বন্ধ করতে যাব এমন সময়। পেছনের বাড়ি বাথরুমের কাচের শার্সি দেয়া জানালায় চোখ পড়ল। দেখলাম একটা কাঠবিড়ালি বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য কত রকম কসরত করছে। কখনও পেছন ঘুরে বসছে, কখনও সামনের দুটো হাত দিয়ে মুখ ঢাকছে। তারপর দেখলাম নিজের লেজটা তুলে, ফুলিয়ে নিজেকে আড়াল করছে। মাঝেমধ্যে লেজ ঝাড়া দিয়ে জল থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করছে। আর বেশিক্ষণ তার এই কার্যকলাপ দেখার সুযোগ হল না। জলে ঝাপটা র জন্য জানালা বন্ধ করতে হল।
কাঠবিড়ালির কিটিক কিটিক আওয়াজ সারা দিন শুনি।
কিছু মুড়ি, বাদাম জানালার উপর রাখি তাদের জন্য।
সেদিনও সকালে চায়ের কাপ নিয়ে বসে আছি। হঠাৎ দেখি পেয়ারা গাছে দুটো কাঠবিড়ালি ঘুরে বেড়াচ্ছে। দেখে মনে হল একটা বাচ্চা কাঠবিড়ালি আর অন্যটি বড়ো।
পুরো পেয়ারা গাছে তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে। গাছে পেয়ারার ফুল ধরেছে। কিছু ছোটো ছোটো পেয়ারাও ধরেছে। সব পেয়ারা গুলো তারা শুঁকে দেখছে। গাছের পিঁপড়ে ধরে খাচ্ছে। কিন্তু কোনো কাঁচা পেয়ারার গায়ে আঁচড় দিচ্ছে না বা কামড় দিচ্ছে না। বড়ো কাঠবিড়ালি যা করছে, ছোটোটা তার অনুসরণ- অনুকরণ করে চলেছে।
বুঝতে বাকি থাকল না যে মা কাঠবিড়ালি নিজের ছানাকে জীবনের ট্রেনিং দিচ্ছে। সারা গাছে ঘুরতে ঘুরতে একটা ডালে গিয়ে উঠল দুজনে। খেয়াল করে দেখলাম সেই ডালে একটা পেয়ারা বেশ পেকে উঠেছে। বড়ো কাঠবিড়ালি পেয়ারা শুঁকে দেখল, তারপর ছোটো কাঠবিড়ালি। মা কিচিক করে কী বলল কে জানে। ছোটো কাঠবিড়ালিটা পেয়ারা টায় প্রথম কামড় দিল।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।