যদি প্রতিপক্ষের সাথে সংলাপ চাও
তাহলে স্বচ্ছ হও;
জলের মতো স্বচ্ছ হওয়া ভালো
জলের শরীরে কোনো কালো আবরণ থাকে না।
মনের কালিমা; সমস্ত উগ্রতা, মূঢ়তা শেকড় পর্যন্ত একেবারে ঝেড়ে ফেলো জলে!
উদাসী হাওয়ায় নদীর পাড়ে বসে একটু জলকন্যার দিকে তাকাও
দেখো সে কিভাবে জলেই থাকে প্রবল ঢেউয়ের মাঝে!
পারস্পরিক সহাবস্থান করে জলের সাথে মিশে।
তুমি বরং শরতের কোনো পড়ন্ত বিকেলে নীল আকাশের নীচে বসো
আকাশের কাছে একটি খোলা চিঠি লিখো সংলাপের ব্যাপারে
সে-ই হয়তো সংলাপের ধারাপাত, নাম, নিশানা সম্পর্কে তোমাকে পরামর্শ দিবে
ফিরতি চিঠিতে —
আর হ্যাঁ
সংলাপের জন্য যে হাসিমুখী বুড়ো আঙ্গুলটি অপেক্ষা করছে
তার হাতটি ধরো, ছেড়ো না
সুন্দর আগামীর জন্য।
২| তোমাকে দেখলেই
ওই নিকানো উঠোনে যে লাজুক মুখটি দাঁড়িয়ে আছে
সে তুলা রাশির জাতক
ম্যানগ্রোভ বনের মেঘভরা আষাঢ়ের মতো তার হৃদয়
তার চোখের জলে ভেসে যেতো নদী, বন-প্রান্তর…
খুব দীর্ঘ ছিল তার আষাঢ় হদয়
প্রশস্ত হোয়াংহোর মতো
মেঘের চেতনা করতো বুদবুদ।
তবে তার হৃদয়ে ছিল রবীন্দ্রের মূর্ছনা, বাঁশির সুর।
তার কৌমার্য মন করতো পূর্ণিমায় স্নান।
মাঝে মাঝে সে-ও হতো উষ্ণীষ, উষ্ণ দুপুর
শুকিয়ে নিত সব জল, হয়তো এটাই ছিল তার স্বপ্ন, পেত সুখ
ঘাস, গাছপালা জন্মাতো পূর্বের মতো
নিবিড় হতো বনানী, বৈশাখী মাটির বুক
সব অবহেলা ঝেড়ে ফেলে তোমাকে দেখলেই অদূর।
৩| বীজমন্ত্র
যে মৃতদেহ পড়ে আছে অনাদরে, অযত্নে, নিগ্রহে বেওয়ারিশের মতো
আঁধার-অন্ধকারে
তাকে একবার স্যালুট করো
লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে দাও।
তার মস্তিষ্কজাত বীজমন্ত্র বুঝার চেষ্টা করো।
ফুল দিয়ে একটু ধুয়ে নাও নবরূপে।
মৃত্যুর আগে যে রঙ সে রেখে গেল
তুমি সে রঙ দিয়েই স্নান করো
দেখবে এর ধূসরতার মধ্যেই লুকিয়ে আছে পরিবর্তনের সোনালি রেখা
শতবর্ষ যাবৎ তুমি যা খুঁজেছো মুক্তির কথা ভেবে!
এ রঙ মাচুপিচু’র মতো আলোক ছড়ায়;
তার মোহন সুর দ্রোহের চৌকাঠে দাওয়াত জানায় বদলের
বিপন্ন প্রাণ থেকে প্রাণে।
এ রঙচর্চা দেখে এবেলা
মৃত আঁধারদেহ, তার আত্মা দূর থেকে শান্তি পাবে
যুদ্ধজয়ের মতো শান্তি।
হয়তো তার মৃত নির্বাক মুখ আবার সবাক হয়ে উঠবে
নতুন রঙ মাখার নেশায়…।