গুচ্ছকবিতামূলে রতন বসাক

১।  ভেবে দেখো

চলছিল বেশ ভালোই আমার
হঠাৎ করে কি যে হলো !
সব হারালাম এক নিমেষে ।
কোন কিছু বোঝার আগেই
পরলাম আমি বদনামিতে,
এখন কি যে করি ?
ভেবে-ভেবে হচ্ছি দিশেহারা
মনের কষ্ট কারে বলি ?
দোষটা কি, ছিল আমার ?
আমার মতো সবাই করে
হয় না তাদের কোন দোষ ।
আমার বেলায় এমন কেন হলো !
বদনাম হলে একবার কোথাও
ভীষণ কঠিন সুনাম পেতে;
যতই করো কোন কিছু ।
কোথাও সুনামের সাথে চলতে হলে
দেখছি এখন সবাই করে,
পারিনি যেটা আমি ।
আমার মতো আমি থাকি
সত্যটাকে সোজা মনে বলে ফেলি,
এটাই আমার দোষ ।
কারো বদনাম করা খুবই সহজ
সুনাম পাওয়া ভীষণ দুর্লভ,
তাইতো একটু ভেবে দেখো ।

২। সঠিক বিচার

সাধুগুলোর হত্যা দেখে
চোখে আসে জল,
কারণ ছাড়া গুজব শুনে
মারলো যখন দল ।
পুলিশ ছিল সামনে ওদের
পালায় ছেড়ে সব,
লাঠি দিয়ে মারতে মারতে
করতে থাকে রব ।
এতই নিষ্ঠুর মানুষগুলো
দয়া মায়া নাই,
চোখে মুখে শুধুই ছিল
ক্রোধে ভরা ছাঁই ।
কোথায় গেল মানুষ্যত্ব
কি ভয়ঙ্কর রূপ,
শাস্তি ওদের দিতে হবে
যতই বলুক চুপ ।
এমন করে চলতে থাকলে
সমাজ হবে ক্ষয়,
সঠিক বিচার করতে হবে
কারো ভয়ে নয় ।

৩। মনের টানে

ঈদের জন্য করছি সবাই
হাটে কেনাকাটি,
সকাল থেকে খুশি মানাই
হয় না যেন মাটি ।
সবার মুখে খুশীর ঝিলিক
পবিত্র রমজানে,
বছর ঘুরে আবার পাচ্ছি
আনন্দ ওই প্রাণে ।
নমাজ পড়বো ঘরে এবার
বাইরে যাওয়া মানা,
লক ডাউনে বাইরে গেলে
রোগটা হবেই জানা ।
গরীব দুখী যারাই আসুক
করবো কিছু যে দান,
ঈদের দিনে হৃদয় থেকেই
তাদের দেবো ঐ মান ।
ধর্ম মানো নিজের মতো
উৎসব হলো সবার,
হিংসা ভুলে মনটা থেকে
গলায় লাগো এবার ।

৪। আসল বন্ধু

প্রতি বছর আসছে ধেয়ে
এক-এক নামে ঝড়,
আপন মনে তান্ডব করে
ভাঙছে বাড়ি ঘর ।
কিছু মানুষ নিজের স্বার্থে
বৃক্ষ কেটে নেয়,
লোভের বশে কম দামেতে
বেচে তারা দেয় ।
ধরার খেয়াল রাখে নাতো
ধ্বংসে ওদের মন,
সেই কারণেই কষ্ট ভোগে
দেশের বাকি জন ।
বৃক্ষ মোদের আসল বন্ধু
ওদের জানা নাই,
অন্যায় ভাবে কেটে নিলে
বাধা দেবে তাই ।
কত ভাল আছে দেখো
চেয়ে সুন্দর বন,
ধরার সবুজ বড় বৃক্ষই
হলো আসল ধন ।

৫। যদি ফেরো

কত আশা মনে বেঁধে তারে কাছে আনি
দিনগুলো কেটে যাবে দেখে মুখ খানি ।
জীবনের খেলাঘরে রবো সুখে দুখে
তাই ভেবে একে একে স্বপ্ন গড়ি বুকে ।
কি যে হল জানি নাতো একদিন বলে
তোমায় এখন আমি ছেড়ে যাব চলে ।
ভেবে পাইনিতো মানে শুনে তার কথা
শুধুই পেলাম যত বুক ভরা ব্যথা ।
ভালবেসে কাছে ডেকে বোঝালাম তারে
সে কি ভালবাসে এত চাও তুমি যারে ?
পারবে কি দিতে তার সব কিছু তুলে
বাঁচতে পারো কি তুমি সেথা মোরে ভুলে ?
কোন কথা না বলেই চলে সে তো গেল
এখন শুধুই দুঃখে অশ্রু জল ফেল !
কত ভেবে কত স্বপ্ন দেখে ঘর গড়ি
তাঁরে বিনা একা বসে ভেবে আমি মরি ।
তবু যদি কোন দিন ফেরো ভুল বুঝে
হেথা রয়ে যাব আমি নিও এসে খুঁজে ।
মেনে নেব সব কিছু ভালবাসি তাই
তুমি ছাড়া ভবে অার দামী কিছু নাই ।

৬। নামটা আগে

দানের থেকে নামটা আগে
প্রচার চাইছে তাঁরা,
গরীব দুখীর দুঃখ দেখেই
দিচ্ছে এখন যারা ।
আমার জমা করা টেক্সে
ত্রাণ সামগ্রী দেবে,
দেবার সময় সবাই মিলে
সেলফি তুলে নেবে ।
পাবে একজন দেবে দশজন
হাসি মুখটা করে,
একটু পরেই ওদের থেকেই
সবাই যাবে সরে ।
বাকিরা সব সেলফি দেখেই
দৌড়ে আসে পেতে,
ত্রাণের কিছু পেয়ে আজকে
যদি পারে খেতে ।
চুরি করে পকেট ভরছে
দেখায় শুধু ছবি,
সেই সব দেখে মন কষ্টে
লিখে ফেলেন কবি ।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।