সম্পাদিকা উবাচ

৫৬ বছরের মহিরুহটা ছায়া দিয়েছে অনেককেই
৩৫ বছরের দীর্ঘ সাংবাদিক জীবনে বাংলা সংবাদমাধ্যমের রূপ বদলের অন্যতম পথপ্রদর্শক ছিলেন অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৪X৭ সংবাদ দুনিয়ায় জি মিডিয়া যখন বাংলা চ্যানেল ২৪ ঘণ্টা লঞ্চ করেন তখন তাঁর প্রথম সারির কর্মীদের মধ্যে ছিলেন তিনি। জীবনের শেষ দিনেও সেই চ্যানেলের দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধে।যদিও মাঝের কয়েক বছরে এবিপি ডিজিটাল থেকে কয়েক মাসের জন্য TV9-এও এডিটর হিসেবে কাজ করেছেন সাংবাদিক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। কেরিয়ারের শুরুর দিকে যুগান্তর, আজকাল, ইটিভি-তেও সাংবাদিকতা করেছেন তিনি। কাজ করেছেন আকাশ বাংলা, আনন্দবাজার পত্রিকাতেও। প্রিন্ট হোক বা ইলেট্রনিক মিডিয়া দক্ষতার সঙ্গে সামলেছেন তাঁর ভূমিকা।
ছাত্র হিসাবে অতি মেধাবী ছিলেন তিনি। বাংলা সাম্মানিকে স্নাতকস্তরে এবং স্নাতকোত্তর স্তরে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বিভাগে প্রথম হয়েছিলেন। তাঁর বাংলা লেখনী এতটা গুণে সমৃদ্ধ ছিল যে তাঁর পরীক্ষার খাতা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কাইভে রাখা ছিল। সাংবাদিকতায় তিনি ছাপ ফেলতে শুরু করেছিলেন আনন্দবাজার পত্রিকায় নব্বইয়ের দশকে দিল্লি থেকে জাতীয় রাজনীতির কভারেজে। আনন্দবাজার থেকে তিনি পা রেখেছিলেন ইটিভি বাংলায়। সেটা ছিল টেলিভিশন সাংবাদিকতায় তাঁর অভিষেক। সাফল্যের সঙ্গে ইটিভি বাংলা-কে একটা স্থানে নিয়ে আসার পর তিনি যোগ দিয়েছিলেন আকাশ বাংলা নামে আরও এক টেলিভিশন নিউজ সাংবাদিকতায়। এরপর সেখান থেকে জি ২৪ ঘণ্টায়। এই সংস্থায় অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সাংবাদিকতাকে একটা অন্য উচ্চতায় নিয়ে যান। ২৪ ঘণ্টায় তাঁর সাংবাদিকজীবন এতটাই বর্ণময় ছিল যে আনন্দবাজার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের দায়িত্ব ছেড়ে তিনি ফের ফিরে আসেন জি ২৪ ঘণ্টায় হাল ধরতে। আনন্দবাজার ডিজিটাল-এর দায়িত্ব ছেড়ে একটি নতুন টেলিভিশন নিউজ চ্যানেলের দায়িত্ব নিলেও সেখানে তাঁর মন টেকেনি। জি ২৪ ঘণ্টার পরিচালন কর্তৃপক্ষের ডাক পেয়েই ফিরে গিয়েছিলেন নিজের ঘরে। প্রত্যাবর্তন হল, জয় এল কিন্তু বিজয় উৎসবকে অধরা রেখেই না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় ৷