সম্পাদকীয়

দেশ বলতে সত্যি কী বোঝায় ! একটা মানুষের কর্মভূমি না জন্মভূমি ? কোন একটা মানুষ জন্মাল একটি দেশে তারপর কাজের কারণে, পারিবারিক কারণে, বারাজনৈতিক কারণে, বা আর্থিক কারণে যদি তাকে জন্মভূমির থেকে অনেক দূরে থাকতে হয়, তবে তাঁর ক্ষেত্রে কোনটা তার দেশ, জন্মভূমি না তার কর্মভূমি, সেটা ঠিক করা খুব কি কঠিন হবে? আমার মনে হয় না৷ প্রতিটি দিন যে দেশের বায়ু, সূর্যের তাপ, নদীর জল, ক্ষেতের শস্য তাকে বাঁচিয়ে রাখে তা তার জন্মভূমি মা না হোক, ধাতৃ মা তো বটে! তাই সেই ধাতৃভূমির প্রতিও সে সমানভাবে দায়বদ্ধ৷
যে জন্মভূমির সাথে তার নারীর যোগাযোগ সে তার জন্মদাত্রী মা, তাকে যেমন নিজের থেকে পৃথক করা সম্ভব নয়৷ আবার যে কর্মভূমির উপর প্রতিদিন সে কর্মরত থেকে গ্রাসাচ্ছাদন এবং বসবাসের শীতল আশ্রয় পায়, তার সাথেও তো আত্মার সম্পর্ক! তাই তাকেও অবমাননা করা সম্ভব নয়৷ এ যেন একজন মা দেবকী অপরজন মা যশোদা৷
আবার আরও একদল মানুষ আছে, এই ধরুন আমার মত৷ যাদের পূর্বপুরুষেরা দেশ ভাগের সেই অসহিষ্ণু সময়ে চলে এসেছেন এপার বাংলায়৷ তাই আমরা না জন্মসূত্রে না কর্মসূত্রে সরাসরি বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত৷ অথচ একটা অদৃশ্য সুতো আমাদের পূর্বপুরুষদের ছুঁয়ে আমাদের চারপাশেও পাকদণ্ডীর পাকের মত ঘিরে রেখেছে, বেঁধে রেখেছে একসাথে, এক সুতোয়৷ তাই বাংলাদেশের প্রতি, বাংলাদেশের মাটি, জল, আলো, হাওয়ার প্রতি আত্মিক যোগাযোগ অনুভব করি৷ সেই মায়ের কোলের মাথা রাখতেও ইচ্ছে করে বড়৷ কারণ বাংলাদেশ তো ভারতবর্ষের থেকে কোনদিনই পৃথক ছিল না! একটা ভৌগোলিক সীমানা তৈরি করে দিলেই বুঝি মাকে ভাগ করা যায়?
” তাইতো বলি, আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি “
সুস্থ থাকুন৷ ভালো থাকুন৷ লিখতে থাকুন৷ পড়তে থাকুন৷
দয়া করে লিঙ্ক শেয়ার করবেন।
রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়