সম্পাদকীয়

জরাজীর্ণ জীবন কাঁটাছেড়া চলে। কুৎসিত মৃত্যুর চোায়াল, যতুগৃহ জ্বলছে। আবার অন্যত্র ভাগীরথীর অমরত্বের ধারা। বিশ্বম্ভর পালকের লীলা বোঝা ভার! কখন যে ধ্বংসের ভস্ম ওড়ায় আর কখন যে সৃষ্টির কনকাঞ্জলি ছুঁড়ে দেয় সেও এক আশ্চর্য ধাঁধা! অন্তলীন জীবনের কথকতা। বেনজির বৈচিত্রের নকশাকারের মর্জিমাফিক চাল। স্রষ্টার প্রবহমান কীর্তি, সময়ের সিঁড়ি বেয়ে অক্ষয় অথবা নশ্বরের খেলা। পাওনাগণ্ডার ফাঁক গলে কানাকড়ি অদলবদল, রঙচঙে খোলনলিচা।
বিল্বপত্রের পবিত্র ছোঁয়ায় সব রক্তক্ষরণ শ্লথ হয়ে আসে ক্রমশ। বারোয়ারি পাহাড় কিংবা অজানলম্বিত বটবৃক্ষ অথবা আদিগন্ত সমুদ্র… আশ্রয় শুধু ছায়াপথ, প্রতীক্ষা শুধু অমৃতকুম্ভের। বিষয় বৈষম্য আক্ষরিক ইন্দ্রজাল। গন্তব্যের বৃত্তে পৌঁছাতে গিয়ে শূণ্য অথবা কাটারা ঘর দখল করে। পান্ডুলিপির পাতায় ধার করা আরব্যরজনীর কুশীলবরা কব্জা করতে চায় বারবার। মিথ্যার ফাঁদে মণিকাঙ্চনযোগ, নাকি ভ্রম, পদস্খলন, নাকি ধ্বংস, শেষ!
সত্য- সুন্দর। অনাড়ম্বর হলেও আগুনের মত তেজী। বজ্রনাদের মত অহংকারী। শিশুর মত পবিত্র। অরূপ, অনন্ত, অসীম। বহুরূপী সময়ের গায়ে টেরাকোটা অক্ষরভারে লেগে থাক আমার আতিশয্য বিহীন তুচ্ছ আত্মগত প্রহর। যাপনের পটচিত্রে প্রতীত কোলাহল ঘিরে সামান্য আমির কিছু স্পষ্ট উচ্চারণ উচ্চকিত হোক। ধ্বনিত হোক বরাভয় জীবনের সঙ্গীতে আমৃত্যু- মিথ্যা নয় সত্য, কৃত্রিম নয়, অকৃত্রিমের আরাধনা।
✍️ রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়