• Uncategorized
  • 0

|| অণুগল্প ১-বৈশাখে || বিশেষ সংখ্যায় পূর্বা কুমার

বসন্ত

রজতবাবুর সবই ঝাঁ চকচকে। পোশাক-আশাক, গাড়ি,বাড়ি,স্ট্যাটাস, এমনকি একমাত্র ছেলেটিও। বিলেত ফেরত। চোখ ধাঁধানো চাকরি।
সমাজে রজতবাবু সৌখিন মানুষ বলে পরিচিত। সব কাজেই একটা রুচির ছাপ রাখেন। আগামী একুশে ফাল্গুন ছেলের বিয়ে। শহরের নামী ডেকরেটরের সঙ্গে কথা বলেছেন। গোটা বাড়িতে বসন্তের ইমেজ আনবেন। বাড়িতে তৈরি করা হবে কৃত্রিম পলাশ আর শিমুলের বন। থোকা থোকা টুকটুকে লাল ফুলে ছেয়ে থাকবে গাছগুলো। বন থেকে মাঝে মাঝে শোনা যাবে কোকিলের ডাক।ছাদ থেকে উঠোন সর্বত্র ফুলে ফুলে রঙিন হয়ে উঠবে। সানাইয়ে বাজবে বসন্তবাহারের আলাপ।
মেন গেটের সামনে নহবতখানা তৈরি হচ্ছে। বাহারি মঞ্চ। বাকি সব আয়োজন প্রায় সম্পূর্ণ। রজতবাবু ঘুরেফিরে দেখছেন কোথাও কোন ত্রুটি আছে কি না। না:! ডেকরেটরের প্রশংসা করতেই হবে।
— স্যার, একটু অসুবিধে হয়ে যাচ্ছে যে!
ডেকরেটরের কথায় রজতবাবু চমকে পিছন ফেরেন।
— সেকি! কেন!
— ওই গাছটা স্যার….
ডেকরেটর হাত তুলে দেখায়।
রাস্তার ধারে একটা ছোট সাইজের রাধাচূড়া গাছ। থোকা থোকা হলুদ ফুলে ভরে আছে গাছটা। একেবারে উজাড় করা হলুদ। মৌমাছিরা মহানন্দে মধুভোজে লেগেছে। ছোট্ট ছোট্ট মৌটুসি পাখিগুলো ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ করে ডালে ওড়াউড়ি করছে। উপরের ডালে কয়েকটা প্রজাপতি ভেসে ভেসে বেড়াচ্ছে। হালকা হাওয়ায় ডালগুলো তিরতির করে কাঁপছে। ঝিরঝির করে হলুদ পাপড়ি ঝরে পড়ছে। মাটিতে পাপড়ির হলুদ আলপনা। মহাধূমধামের সঙ্গে যেন এক বিরাট উৎসব চলছে।
— গাছে কিসের অসুবিধে আপনার?
রজতবাবু জিজ্ঞাসা করেন।
— স্যার, ওটার জন্য নহবতের মঞ্চটা স্পেসিয়াস করা যাচ্ছে না।
— ওহ্ হো! এই কথা! ওটাকে কেটে ফেলে দিন।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।