|| বাইশের বাইশে শ্রাবণ একটু অন্যরকম || বিশেষ সংখ্যায় প্রদীপ গুপ্ত

পাগল, পাহাড় আর ঠাকুরের গল্প
কতগুলো পাগল মিলে একটা পাহাড় মাপছিলো।
পাহাড়টার পায়ের কাছে ছিল বিস্তীর্ণ ঘাসজমি
আর তার কোলে ছিল গাছগাছালি পাখপাখালি। সবুজে সবুজে ছাওয়া পাহাড়টার সেই অংশে ছিল
মানুষকে বশ করার যাদু। সেখানে ছিলো চূড়োর থেকে নেমে আসা ঝর্ণাধারার গান আর পাখীদের কলকাকলি,বাতাসের উদাত্তস্বরের আবৃত্তি পাঠ
রঙিন প্রজাপতিদের প্রাণোচ্ছল নাচ।
ধীরে ধীরে সেই পাহাড়ের মাথা যত মেঘেদের রাজ্য পেড়িয়ে গিয়ে আকাশের দিকে উঠেছে ততই সে হয়েছে ধ্যানগম্ভীর, মৌনী, ধরাছোঁয়ার নাগালের অনেক অনেক উঁচুতে কোথায় গিয়েছে হারিয়ে সেটা সেই পাহাড়ের নিজেরও হয়তোবা জানা ছিলো না।
পাগলগুলো প্রথমে ঘাসজমির ভেতরে আনন্দে লুটোপুটি খেল। খুব মজা পেলো ওরা। ভাবলো কি নরম পাহাড়টা দেখেছো? যেমন খুশী মাটিতে কোদাল চালানো যায়, ফসল ফলানো যায়, এমন কি চাইলে খেলেও নেওয়া যায় অনেকটা।ওরা সেখানে লুকোচুরি খেললো, বীরপুরুষ সাজলো, শিশু ভোলানাথ বানালো, ওরা সেখানেই থেকে গেলো সেই নরম পেলব মাটিতে।
আর কিছু পাগল তারা ভাবল নাহ্,আরও একটু ওপরে উঠেই দেখা যাক নাহয়।
ওরা সেখানে এসে দেখলো হাজার মজা ছড়িয়ে আছে সেখানে তাদের জন্য, ওরা সেখানে প্রকৃতির
নিবিড় সান্নিধ্যে প্রেম কাকে বলে বুঝলো, অন্তরের প্রেম আর পূজার নৈবেদ্য সাজিয়ে তারা ওখানে ঝর্ণার সাথে আর পাখপাখালির সাথে গাইলো, আবৃত্তির ভেতর দিয়ে বাতাসের সাথে নির্ঝরের স্বপ্ন ভাঙালো, চিত্রাঙ্গদার দেশে গিয়ে প্রজাপতিদের সাথে গানের ফুলের ডালিতে নেচে বেড়ালো। কিছু পাগল থেকে গেল সেখানে। বাকি যারা তারা উঠতে লাগলো পাহাড়ের গা বেয়ে আরও আরও ওপরে। কঠিন কঠোর রুক্ষ মাটিতে তারা খুঁজে পেলো রক্তকরবীর ফুল, আর ঊষর মাটিতে আবিষ্কার করলো গোরা সমাজের ইতিবৃত্ত। তাদের বেশীর ভাগ রয়ে গেল সেখানেই। বাকিরা রথের রশিতে খুঁজতে বেরুলো প্রানের ঠাকুরকে।
তুমি কি খুঁজতে বেরোবে পাগলগুলোকে? তাহলে আমার সাথে এসো আমি তাদের কয়েকজনকে জানি, তোমাকে তাদের ঠিকানা দিতে পারবো যারা ঐ পাহাড়ের শেষ প্রান্তে পৌঁছে ঠাকুরকে খুঁজতে গেছে। প্রানের আরামকে মনের আনন্দকে আর আত্মার শান্তিকে।