এই গল্পটা একটু পুরনো। তাও প্রতিবার পয়লা বৈশাখের সময় এলেই দীপের সেই প্রবচনটা মনে পড়ে। মা বলত, ” বছরের প্রথম দিন নতুন জামা পরতে হয় সবাইকে” গল্পটা পুরনো, তাই সে সময়কার ছোট্ট দীপ মায়ের সব কথাকে প্রবচন মনে করতে পারত।
সকাল-সকাল স্নান সারা। চিড়িক পিড়িক লাফাতে লাফাতে ছুটেছিল সৌমদের বাড়ি। প্রতিবার পয়লা বৈশাখে দুবাড়ি এক হয়ে যায়। সকাল থেকে সবকিছু একসাথে। স্কুল নেই, পড়া নেই। শুধু খেলা আর দারুণ দারুণ খাওয়াদাওয়া। লাল টকটক গেঞ্জি আর ফুলফুল হাফপ্যান্ট পড়ে সৌমদের বাড়িতে যাচ্ছিল দীপ।
“ওরে! ওরে! আস্তে চল দিপু। গাড়িঘোড়ার রাস্তা… কি সুন্দর লালজামা পরেছে গোপাল সোনা আমার” তুলসী পিসি। সৌমদের বাড়িতে কাজ করে। বাসন টাসন মাজলেও তুলসী পিসির গায়ে একটা সুন্দর মা মা গন্ধ। কি বিচ্ছিরি শাড়িটা পরেছে দ্যাখো…
“তুমি বাড়িতে স্নান করতে যাচ্ছ, তাই না! নতুন শাড়ি পরে আসবে তো বিকেলে?”
” নতুন শাড়ি! হি হি হি দীপুসোনা চাকরি করে আমায় শাড়ি কিনে দেবে, তখন পড়ব।”
দীপ এখন বড় হয়েছে। জানে, প্রবচনগুলো সব সত্যি হয় না। নতুন বছরে নতুন জামা আর কখনো পরেনা অর্কদীপ।