|| অণুগল্প ১-বৈশাখে || বিশেষ সংখ্যায় পিয়ালী চট্টোপাধ্যায়
by
·
Published
· Updated
পুঁই শাক
সীমার মাটির বাড়ির উঠোনে একটা পুঁই গাছ হয়েছিল আস্তে আস্তে গাছটা মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছিল দেখে সীমা ওর বরকে বলে একটা মাচা তৈরি করে দিল। সীমার ছেলে প্রতিদিনই বলে মা পুঁইশাক রান্না করো। সীমা বলে আচ্ছা একদিন ভালো করে পুঁইশাক রান্না করে দেবো । সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মাটির বাঁধ এর ঠিক নিচেই সীমার ঘর। ক’দিন ধরে আকাশের অবস্থা ভালো না। আজকে তো পঞ্চায়েত থেকে মাইকে ঘোষনা করে গেল সবাই সাবধানে থাকুন। ঝড় আসছে নিরাপদ জায়গায় সরে যান। সেই দিন সকাল থেকে জোরে হাওয়া বইতে শুরু করল। সীমা বলল আজকে পুঁইশাক কটা রান্না করবো। সীমার বর বলল তাড়াতাড়ি চলো রান্না করতে হবেনা, খুব জোরে ঝড় আসছে মাইকে ঘোষণা করেছে। সীমা বরকে ভাতের হাড়ি আর দরকারী কিছু জিনিসপত্র দিয়ে বলল তোমরা ত্রাণকেন্দ্রে চলে যাও আমি এই পুঁই চচ্চড়ি রান্না করেই যাচ্ছি। ওরা চলে যেতেই দমকা হাওয়া আর জলের তোড়ে বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে পড়ল। ভাসিয়ে নিয়ে গেল ঘর গেরস্থালি। সীমাকে খুঁজে পাওয়া গেল না। দুদিন ত্রাণকেন্দ্রে দম বন্ধ করে বসেছিল বাবা আর ছেলে তে। দুদিন পরে জল নেমে যেতেই ছুটে এসে দেখল পুঁই গাছের মাচা র নিচে পুঁই লতা হাতে জড়িয়ে সীমার ফুলে ওঠা মৃতদেহটা পড়ে আছে।