• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে পিয়াংকী (পর্ব – ৬)

স্টেশন থেকে সরাসরি

ইংরেজি ৩১শে মে ২০২১
বাংলা ১৬ ই জৈষ্ঠ্যমাস ১৪২৮ সোমবার

টিকিট কাউন্টার ।বিক্রি হচ্ছে দূরত্ব। লাইনে দাঁড়িয়ে আছে লোকজন ।সব্বাই কিছুটা করে সময় কিনে নিতে চাইছে।কম বেশি কাছে দূরে উদ্দেশ্য একটাই যেমনভাবে হোক দূরত্ব বুঝে নিতে হবে।
ভীষণ ভিড়।উঠে পড়লাম।খুব ঠেসাঠেসি।নিঃশ্বাস নেওয়া যাচ্ছে না।আমার হাইট পাঁচ ফুট ছয় ইঞ্চি। ভারতীয় মেয়েদের উচ্চতা অনুযায়ী বেশ ভালই লম্বা বলা চলে।ফলতঃ যেটা হল অন্য সকলের মাথা বুক হাত পা সবকিছু ঠেকতে লাগল আমার শরীরের সাথে। ছোঁয়া বড় বিষম বস্তু।যদিও আমি বস্তুবাদী নই কোনদিনই তবু একটা অজানা আশ্রয় কাজ করতে থাকল।অবশ্য খানিক অস্বস্তিও যে ঘিরে ধরছিল না সেটা বলা যায় না। নিজেকে একটুআধটু আশ্রয়দাতা ভাবছি ঠিক এমন সময় ট্রেনটা এসে পৌঁছল নির্ধারিত স্টেশনে।অনেকে নেমে গেলেন।
পরবর্তী স্টেশনে নামব দেখে আমিও কিছুটা এগিয়ে গেলাম সামনের দিকে। নতুন কিছু যাত্রী উঠলেন। তারা সব্বাই পাঁচ ফুট সাত ইঞ্চি থেকে বেশি। আমি ক্রমশ নীচে নামতে থাকলাম।বাড়তে থাকল দেহের ওজন।
হাত দুটো তুলে দাঁড়ালাম, চৈতন্য মহাপ্রভু ঠিক যেমন করে কৃষ্ণনাম সম্প্রচার করতে হেঁটেছেন মাইলের পর মাইল। নিজেকে সিকিওর করার জন্য লুফে নিলাম স্টেশন মাস্টারের দেয়া পোশাক।
একটা আড়াল পেলাম ।বসতবাড়ি ঢুকে এল শরীরের ভেতর,দরজা জানালা খুলে দিলাম।তখনও আমার ঘরটা ঘিরে হাজারো মানুষ জন্মানোর শব্দ।
ট্রেন চলছে।প্ল্যাটফর্মের গায়ে লিখিত অভিযোগ রেখে ফিরে যাচ্ছে প্যাসেঞ্জাররা। বাংলা হিন্দি ইংরেজি তিনটি ভাষায় ক্রমাগত অ্যানাউন্স হয়ে চলেছে অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ। অনুভব করলাম আমার গায়ে আস্ত মাছের বাজার। আঁশটে গন্ধ।যতই এগিয়ে আসে গন্তব্য ততই আরো বাড়তে থাকে সেই গন্ধ।কিলবিলিয়ে উঠতে থাকি সরিসৃপের মত। একটা সময় সবকিছু শেষ হয়ে নির্ভার হতে থাকল অলিখিত এই প্রতিযোগিতা।
আমি পিয়াংকী। এতক্ষণ স্টেশন থেকে সরাসরি ছিলাম আপনাদের সাথে
পরবর্তী স্টেশনে আলাদা লোক আলাদা লোকেশন।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *