গদ্যের পোডিয়ামে পিয়াংকী – ধারাবাহিক – (চতুর্দশ পর্ব)

ওরফে তারাখসা এবং তুমি বালক

আঠেরোর মেয়ে । পাপ আর লোভ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ব্রিজের ধারে। অসমান ঘর পার হচ্ছে একটু একটু । বিষমবাহু ত্রিভুজের ভাঁজে লুকিয়ে রাখছে হস্তমৈথুন। চোরের মতো চোখ, ভেঙে যাচ্ছে মাটির পুতুল । কাঁঠালিচাঁপায় পোকা ধরার মরসুম আর  গায়ের গন্ধে ঝাঁকঝাঁক জোনাকি।  প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে উঠছে তাঁর একান্ত স্নান । সমগ্র জুড়ে দলিল দস্তাবেজ, কাঠা আর ছটাকের হিসেব। গণিতের গরমিল।

‘যুবতী তোমার গলাধঃকরণ হয় না কেন’, যারা জিজ্ঞাসা করছে, নিস্তব্ধ দুপুরে তাদেরই কানাকানিতে এ’ মহল্লায় কান পাতা দায়, আরও দায় শ্বাস নেওয়া। তবু, কালান্তক টিকে আছে। ঈর্ষার দুয়ারে  বক এসে খুঁটে নিচ্ছে গমদানা। সাদা পেঁচা সঙ্গমের নামে খেয়ে ফেলছে অনিয়ন্ত্রিত সোহাগ। বৃষ্টি হবে। বৃষ্টি হবে। বিভৎস বৃষ্টি। যাদের জ্বলছে তারা পরে নেবে ঢিলেঢালা পোশাক। অকারণ অমাবস্যার দিকে ছুটে যাবে কলতলার পিছল-জল। তারপর অতি সন্তর্পণে ধীরলয়ে খুলবে নির্ধারিত স্নানদরজা।

পাপ এসে বসেছে পাশটিতে। লাল রঙ গা। পচা মাছের গন্ধ। আঠেরোর মেয়ে কি নির্বিকারই থাকবে নাকি আঙুলের মাপে গড়িয়ে নেবে বিশ্বাস?

কেন এসব নিয়ে কথা বলছি, আমি তো আঠেরো পেরিয়ে এসেছি সেই কবেই। আজও মাঝরাতে জল খেতে উঠে বিষম খাই যখন, কে যেন ধাক্কা দিয়ে বলে ‘শৈশব কাটল না কন্যে তোমার,তুমি তো আঠেরো প্লাস ‘। ওমনি জানেন উন্মাদ সে জল আরও বেশি করে ভিজিয়ে দিয়ে যায় আমার অসাড় হাতদুটো।

শাপলাবিলে ডুব দিয়েছি স্নানের নামে । ধানক্ষেত থেকে মাটি এনে লক্ষ্মীর ঘটের তলায় রেখেছি সেই কবেই ৷ মেছো রমণীর শ্যামলা কপালে টিপ আঁকার সময় চাঁদের ঘনত্বের কথা মাথাতেও আসেনি আমার । আনিনি নৌকার খণ্ডলোহা। এজন্যই কি অপয়া বললে আমার চামড়া ফাটে ?
গায়েগতরে জোঁক এখন । বাতের ব্যথা চেটে নিচ্ছে ঠোঁটের লালা। ইঁদুরের মাটি দিয়ে গহনা বানালাম। স্তন ধুয়েমুছে রাখলাম প্রেমিকের জন্য। প্রেমিক আমার লাজুক ভীষণ। কন্যারাশি কন্যালগ্ন তাঁর জ্যোতিষছকে। ভরাকোটাল এলে তাঁকে তুলে দেব নৌকায়।

হুবহু, লেগে আছ। কাচের দরজায় ঝাপসা জল। চেপে রেখেছি তোমায়। ঠেকিয়ে রাখবার এ’ সব অছিলাই গৃহস্থ জানি। আদিম বরাবরই সিংহের মতো। সিঁড়িঘর থেকে ঘুঘু দেখছে আমার যাবতীয়।

সব আঠেরোরই কি এই একই মুদ্রাদোষ ?

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *