গদ্যের পোডিয়ামে পিয়াংকী – ধারাবাহিক – (ত্রয়দশ পর্ব)

ওরফে তারাখসা এবং তুমি বালক

অহঙ্কার অলঙ্কারের মতো, কেউ হাতে পরে কেউ গলায় কেউ চুলের খোঁপায় কেউ গদ্য লেখার আঙুলে। ক্লদ মনেট সাদা পাতার মধ্যে টাঙিয়ে রেখেছিলেন, হ্যাঁ অহঙ্কার। আজও তাঁর এসব অলঙ্কার থেকে টপটপ করে জল পড়ছে। বৃষ্টির জল। শিল্পীর ঘামে লেগে থাকা নুন শুকোচ্ছে আজও।

পর্বতে পর্বতে আছড়ে পড়লো সাদা নীল ধূসর। যেন অর্জন করবার নেশায় ছবি একাএকাই বিড়বিড় করে যাচ্ছে ক্রমাগত। আর এদিকে বিদ্ধ হতে হতে আমি ঠেকেছি এক সমুদ্রের পাড়ে। অজস্র লালকাঁকড়া, খিঁচে ধরছে পা। ওই যে সাদা পাতার গল্প বলছিলাম, সে কারণে এগোচ্ছি। ঝাপসা আলোর ভিতর থেকে উঁকি দিচ্ছে চেতনা সম্ভাবনা। আমি চৈতন্যকে রিমার্ক করেছি এযাবৎকালের অস্তিত্বের ভিতর, ভিন্ন ভিন্ন মাত্রা এনেছে আমার চেতনার পাথর। কখনো সে আমায় বলেছে পুকুরের ওপর পড়া বৃষ্টিপাত দেখতে , কখনো বলেছে আষাঢ়ের বর্ষায় কুকুর ভিজে গেলে বাসাবাড়ির বারান্দার চারহাত বাড়ানো জায়গায় কীভাবে কুঁকড়ে সে শুয়ে থাকে সেটা দেখতে আবার কখনো আমার চৈতন্য আমায় চোখ বন্ধ রাখতে বলেছে। আমি শুনে শুনে এগিয়েছি ঠিক যেমন ক্লদ মনেট পাহাড়ের গায়ে আছাড়িবিছাড়ি ঢেউ এঁকেছেন, যেন তিনি খুব ব্যস্ত পরমুহূর্তেই একটু নিচে তাকালেই তাঁর তুলিকালি সবেতেই, এক নিমেষে সাইবেরিয়ান শীত। পরম ব্রহ্ম শান্ত ধীর এক যোগী এই ছবির নিম্নভাগ আর উত্তর অংশে তীব্র মঙ্গল যেন শুষে নিচ্ছে আমাদের জীবনের অদৃশ্য পালক।

গাঢ় আষাঢ় কিংবা ঘন ঘনিষ্ঠ আষাঢ়, আষাঢ় নিয়ে কথা বলতে বলতে থেমে আছি। দেশ সমাজ রোজ সাপের মতো, খোলস ফেলে আরও বিষাক্ত হচ্ছে। এই বিষদিনে ‘বরিষ ধরা মাঝে শান্তির বারি’ যদি ছবি হয়,শিল্পী অবশ্যই the scene behind every strong whisper ….

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *