সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে পিয়াংকী (সাবেক কথা – ৩)

সাবেক কথা
দরখাস্ত
লুপ্তির পথ কি সরল? বনলতার খাদের মতো চোখ অরুন্ধতীর ভাঁজহীন শরীর অথবা নীরার মার্গদর্শনই কি চলমানতা? এসো, ঝাঁকিয়ে নিই গলা অবধি আটকে থাকা কিছু পুরোনো তেঁতুল আর এক ঢোক হাহাকার। মহল্লায় ঢাকঢোল বাজে, বেপথে বসে বাজনা বাজাই বলে তোমরা ছিন্নমস্তা বলো আমায়।কুলুঙ্গির গোপন কোণে নিঃশব্দে তুলে রাখি সে-সব
লুকিয়ে রেখেছ যে হিসেব, লুকিয়ে রেখেছ যত দলিলদস্তাবেজ, এ-সবের ভেতরে এক ক্ষণজন্মা শ্যামলা মেয়ে, এক দরদী নদী। নির্ধারিত সময়ে সেই গুদাম ঠেলে সূর্য ওঠে, পুড়িয়ে দেয় কাগজপত্তর। ঘরের ভেতর মানুষ জন্মায়, সেই মানুষ বড় হয় চুমু খায় ঘুমোয় ট্রেনের জন্য দৌড়য় আবার একটা দরখাস্তও লেখে। সার্বজনীন একটি দরখাস্ত।
অলসতা কাটেনি আমার, জন্মানোর অলসতা। বড় হবার অলসতা অথবা দরখাস্ত লেখার অলসতা। আমি দেখি, বিছানায় শুয়ে আছে যে সমস্ত ভ্রূণ তাদের হাতে দরখাস্ত, দীর্ঘতম একটা দরখাস্ত।এপিঠ ওপিঠ ফাঁকা তবু তাকে দরখাস্ত বলতে সামান্যতম সময়ও ভাবেনি জনতা, বাধ্যতামূলক
সেই দরখাস্তকে বরখাস্ত করে বিরাট একটা কাটাকুটি এঁকে ঝুলিয়ে দিয়েছি গলায়। আমার আয়ুরেখার পাশে আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ আসছেন, ধুইয়ে দিচ্ছেন বরফগলা জল আর জলবন্টন চুক্তি। এসবের পর ভাঙাচোরা হিসেব নিয়ে বসছে আমার সন্তানসন্ততি। ছাপ্পান্নটা শাড়ি পেটিকোট চোদ্দটা কাঁসাপিতল সাড়ে আটআনা সোনা আর একটি শেষ যতিচিহ্ন।
হিসেব…
দলিলদস্তাবেজ…
দরখাস্তকারী পূর্ণ হয়ে উঠছে স্তনহীন সমান্তরাল বুকে…
২৯ শে জৈষ্ঠ্য
দুপুর ১২ঃ২৮
ইছাপুর