একটা দূরপাল্লার ট্রেন।বিশ্রাম লেখা নেই কোথাও,থামতে জানে না। ওকে কেউ শেখায়নি কিভাবে ডানাপাখনা গুটিয়ে ফেলতে হয় সময় শেষ হবার আগে।
জুন মাস প্রায় মাঝামাঝি, আবহাওয়াতে উত্তপ্ত আষাঢ়। মেঘজমা শরীর ,থম মেরে আছে বুক।একটা বড়সড় বৃষ্টি আসার অপেক্ষায় বসে থাকে যারা তাদের সাথে যোগাযোগ নেই জলজ চাহিদার ,অথচ ফোঁটা ফোঁটা ঘাম গড়িয়ে বইয়ের ফ্রন্ট কভার চপচপে। নিয়মের রাত। চিল উড়ছে মাথার ওপর দিয়ে , ছুটখাট শব্দগুলোও গমগমে। অভিভাবকের মতো । তবুও…
চার দেয়াল। সাড়ে সাতশো স্কয়ারফুটে বরাদ্দ এক চিমটি নুন আর গ্যালন গ্যালন তেল। এক্সপ্রেস ওয়ে ধরে এগোচ্ছে কিছু মৌমাছি। রাণী পুরুষ শ্রমিক।থালায় ভাত বয়স মেপে।সাথে একটা সবজী আর এক পিস মাছ।
পারলে খাও না পারলে ফেলে দাও।
ফুডএক্সপার্ট বসে আছেন একদম সামনের কোচে। তার কাছে পৌঁছতে পেরোতে হবে আনারস বাগান।সেখানে কিলবিল করবে সাপ,যত রাজ্যের অশরীরী ভর করবে ঘাড়ে মাথায় পিঠে।তবু পিঠ বাঁচিয়ে ততক্ষণ ছুটতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত দূরপাল্লার দরজা বন্ধ না হয়…
জন্ম একটা পুকুরপাড়।রোজ জল ছিটোতে হাতব্যথা, স্নানঘরে জড়ো হওয়া প্রজাপতি। খালি গা।উল্কি এঁকে পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায় ঈশ্বর। চিৎকার করে ডাকি। আদর পাবার প্রলোভন পেলে কে ই বা কবে আটকে রাখতে পেরেছে ভেতরের বিষ?
আমি ছন্নছাড়া। মিটমিটে ধোঁয়া ওঠা রঙ থেকে খুবলে তুলছি বাছাইকৃত মুহূর্ত ,ঝাপসা যা কিছু সে সবের মধ্যে চাঁই চাঁই রোদ।দেখতে পেয়েই টেনে হিঁচড়ে সেঁকা রুটির মত আগুন বেড়ে পাতের ওপর। ঝপঝপ…
ঝুপ করে নেমে আসে বিকেলের বিক্রি।শীতল হতে থাকা প্রতিবেশী চোখ কেনাবেচা করে। আমি তাকাই না ভয়ে।মা বলত, আমার চোখে নাকি সাম্রাজ্যবাদী একচেটিয়া শাসন। ঘন অরণ্য।
আয়নায় তাকাই। কাঠকয়লা জ্বলছে, ওদিকে প্রেমিকের গায়ে আমার নামের অভাব আর নুন আনতে পান্তা ফুরোনো সংসার।কালিঝুলি মাখছি ভয় এড়াতে…
ভাগের বরাদ্দ দু’পাল্লার দরজা। একটু একটু করে ভাঙন। পোড়া কপালে তার আওয়াজ শোনার ভাগ্যটুকুও নেই