আজ অনেকদিন হল মনখারাপ।জানালার পাশে বসে থাকি চুপচাপ। স্নান খাওয়া লেখা পড়া খেলা সবকিছু বুকের ভেতরঘরে ঘটে যায় আপনাআপনি।আমাকে আর বাইরে থেকে পরিশ্রম করতে হয় না। ডিপ্রেশন এলে বুঝি প্রত্যেকটা অদৃশ্য স্টেশন কত রঙীন,সেখানে সবুজ সবুজ মাঠ গাছ ডালপালা, হলুদ নীল ফুল পাখি সব পরিপূর্ণ।
শুধু কারোর কাছে ঘটি আছে আর কারোর কাছে বাটি। যে যেটুকু পারছে ভরে নিচ্ছে নিজের গোপন ডেরায়।
অনেকটা দূরত্ব। কিলোমিটার মেপে শেষমেশ যখন সংখ্যা কম পড়ে গেল তখন দেখলাম অনেকগুলো স্টেশন অতিক্রম করে ফেলেছি।
এখন গাছে ফল ধরার মতো মধ্যযামে আলো ধরে ওঠার সময়। এখন হাত পা নখ চুল নিয়ে ভাববার সময়।এখন ডায়েট করে তন্বী হবার সময়। ঘষে ঘষে মেকাপ তুলে সদ্য ফুটে ওঠা রাতের সাদা বেলীর মতো কিশোরী হবার সময়।দুই বেণী ঝুলিয়ে সবুজ মাঠ ভর্তি ঘাসে অকারণ গড়াগড়ি খাবার বয়সই তো এটা।না কর্ম না ধর্ম। কোনকিছুতেই সঠিক মনোযোগ দিতে না পারবার এই বয়সই তো বিগতা যৌবনা নামাঙ্কৃত। সাত নড়ির চওড়া মসৃণ বিছেহার আর কানপাশা দিয়ে সেজে রাতের বারান্দায় ধোঁয়া ওঠা সিগারেটের কাছে আগুনে রিংটোন বাজানোর সময় গা পুড়ে জ্বর আসার মতো সুখ মাঝরাস্তায় না থামলে অনুভব করা যায় কী
জ্বলন্ত উনুন থেকে তুলে নিচ্ছি কয়লা। রান্না চাপাচ্ছি। শরীরের আনাচে কানাচে মুদি দোকান। বিক্রি হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। মোড়ের মাথায় একটি তিনতলা বাড়ি। মাধবীলতা ছেয়ে গেছে তার ছাদ অব্ধি।টগরগাছটাও বেশ লম্বা হয়ে উঠেছে তরতরিয়ে। স্নান সেরে ভিজে চুলে এক বালতি কাপড় কেচে ছাদে উঠতে কষ্ট হয়।হাঁটু ব্যথার তেল বড্ড দামী। কাপড় মেলার ক্লিপেরা জানে চুল শুকোতে কোনো দড়ি লাগে না। একমুঠো মাধবীলতা আর কয়েকটা টগর নিয়ে সিঁড়ি ভেঙে ফের নীচে নেমে সিংহাসনের সামনে বসে গোপাল আর শিব স্নান করানোর সময় মনে হয় অন্তিম তিরিশের রূপচর্চায় ঘি মধু তুলসীপাতা এবং চন্দন ঈশ্বরের চেয়েও দামী
চ্যাটার্জি মুখার্জি চক্রবর্তী বা ব্যানার্জি নয় ওই তিনতলা বাড়িতে থাকে মধ্যযামের আলো।
আমি পিয়াংকী। এতক্ষণ ছিলাম আপনাদের সাথে। পরবর্তী স্টেশনে অন্য কোনো পার্ট অন্য কোনো পার্টিশন…