• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে পিয়াংকী (পর্ব – ১১)

স্টেশন থেকে সরাসরি

ইংরেজি ৫ই জুন ২০২১
বাংলা ২১শে আষাঢ় ১৪২৮
সোমবার

জানেন তো একটা ধারাবাহিক লিখছি। সাপ্তাহিক। টেকটাচটক টি থ্রি নামের দৈনিক ওয়েবজিনের জন্য।বৈশাখের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু করেছিলাম। আজ প্রায় তিনমাস হতে চলল।
‌এই রে! সেরেছে! কাদের বলছি! মায়ের কাছে মাসীর গল্প করে ফেলার বদনাম বাঙালি আর ঘোচাতে পারল না।
আপনারা তো সেই শুরু থেকেই আমার হাত ধরেছেন, আমিও নির্ভরতা কিনেছি আপনাদের ওই দুটো আঙুলে যেটা দিয়ে আপনারা অনবরত স্ক্রল করেছেন স্টেশন থেকে সরাসরি-র বিগত দশটা পর্ব।আমি কৃতজ্ঞতা দিয়ে বুনে দিয়েছি আপনাদের শীতের পশমিনা, বর্ষার ছাতাবর্ষাতি আর বসন্তের কোকিল
যেহেতু প্রতি সোমবার প্রকাশিত হচ্ছে তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই শুক্রশনিবারের মধ্যে চেষ্টা করেছি আগামী পর্বটা লিখতে। না লিখলে বকা খাইনি, সম্পাদক ‘মায়ের পেটের’ দিদির মতো আদুরে গলায় বলেছেন ‘কিরে আর কখন দিবি ভোর তো হয়ে এলো । আসলে আমরা যারা জড়িয়ে থাকি গলার আওয়াজে, পরিচিত অক্ষরে, আমরা যারা সামাজিক মাধ্যমে খুঁজে পাই সম্পর্কজন্ম তারা জানি এরকম ছাপোষা একটা স্টেশন পর্ব লেখা কোনো হিম্মতওয়ালা কাজ কারবার নয়।
আপাতত পেনটা আমার কাছে এসেছে আমি লিখছি। আগামীকাল আপনার হাতে যাবে তখন আপনি লিখবেন। আসলে আমরা লিখব তো সেইইই একই। মানুষের ইতিহাস মানুষের ভূগোল মানুষের অংক মানুষের বিজ্ঞান…
দুটো পর্ব লিখতে লিখতে আজ আচমকাই পেলাম একটা পর্বমধ্য । দেখি কয়েকটা গুড়ি গুড়ি সবুজ উঁকি দিচ্ছে, ঘাড় মাথা নাড়াচ্ছে, চুলকে দিতে বলছে পিঠ, বিলি কেটে দিতে বলছে চুলে।
পর্বমধ্য পেলেই গজিয়ে উঠতে ইচ্ছে করে, মনে হয় বাড়িয়ে দিই হাত, খুলে দিই দরজা। প্রকাশ করে ফেলি ডানকোমড়ের তিল আর পিঠের বাঁদিকের জরুল ।
পর্বমধ্য ডাকলে একটু বিকৃত হই। সাপের মতো বেঁকি, গাছ বেয়ে উঠে যাই দস্যুর মতো। আমিও যাই, আপনিও যান।কোথাও না কোথাও সকলেই যায়। কেউ প্রকাশ করি আর কেউ নিষিদ্ধড্রাগের মতো হজম
আসলে দশটা পর্ব মানেই তো দশটা সপ্তাহ, মানে সত্তর দিন, মানে সত্তরের গুণিতক মূহুর্ত… রোলকলের খাতা।প্রেজেন্টপ্লিস বা উপস্থিত বলে তারা বসে রয়েছে বেঞ্চে। আর আশ্চর্যজনকভাবে আমরা শুধু পর্ব খুঁজছি। ক্ষণ খুঁজছি না একবারও ।সার্চ করে দেখে নিচ্ছি কবি লেখকের বইপত্র, জন্মদিন মৃত্যুদিন, দায়সারাভাবেও কোনদিনও তাদের আঘাত খুঁজছি না।
তবুও নিয়মমাফিকই চলে সব
নক্ষত্রের পাশে বসে গল্পগাছা করে যারা, তাদের ডেকে নিয়ে গিয়ে বসাই বৈঠকখানায়,ঘন দুধ দিয়ে চা করে দিই,সাথে চারটে বিস্কুট। পূর্ব থেকে সূর্য, পশ্চিম থেকে পুরুষ, উত্তর থেকে অলংকার আর দক্ষিণ থেকে ঝিরিঝিরি শব্দ এসে ঘিরে ফেলে ব্যালকনি।আমি নারকেলের আঁচি দিয়ে তৈরি ঝুলন্ত বাসায় সাজিয়ে দিই খড়কুটো। সময় বুঝে বুঝে প্রহরী বসাই।
একদিন দেখি কথার মত বেড়ে যাচ্ছে মূহুর্তরাও।চওড়া রেললাইন। বাড়ছে কর্মী।
পর্ব যত এগোচ্ছে পাথরবাটি টুবুটুবু। জলফোঁটারা ফোঁপাতে ফোপাঁতে ঘুমিয়ে পড়েছে বৃষ্টিপাতের পাশে। লেপ্টে গেছে দশমিক আর গামছাদাগ
কাঁধজল ছুঁই ছুঁই পুকুর। ডুবস্নান।ভেজা কাপড়।
ঘাটে অনেক সিঁড়ি। আমার আদ্যিকালের প্রেমিক আর তার ঘোলাটে ঘোলাটে চোখ পেঁচিয়ে ধরছে সরিসৃপের মতো
কনসার্টে জগজিৎ সিং গাইছেন…
“উনসে নজরে কেয়া মিলি রওশন ফিজায়ে হো গ্যায়ি, আজ জানা প্যায়ার কি ই জাদুগরি কেয়া চিজ হ্যায়
ইস্ক কিজে ফির সামাঝিয়ে জিন্দেগী কেয়া চিজ হ্যায়…
বৃদ্ধি পাচ্ছে পর্বমধ্য। ধীরে ধীরে যুবক হয়ে উঠছে আমার পুত্রসন্তান ‘স্টেশন থেকে সরাসরি’
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *