প্রবাসী ছন্দে নাসিমা রুবি (বাংলাদেশ)

এক থালা ভাতের গল্প
১৫ বছর বয়সের এক কিশোরীর বাসর রাত আজ। বিয়ের দিন রাতে বিয়ে বাড়ির একগাঁদা বাচ্চাকাচ্চার সাথে ঘরের মেঝেতে শুতে দিয়েছিলো নববধুকে। বিয়ের রাতে বউ বাসর ঘরে দিলে নাকি অমঙ্গল হয়।
পরদিন রাতে বউকে বাসর ঘরে দেয়া হলে। নববধু চোখ তুলে দেখে ঘরে শুধুই একটা চৌকি, সিথানে একটা কুপি মিটমিট জ্বলছে। কুপির আবছা আলোয় দেখা যাচ্ছে চৌকিতে একটা কাঁথা বিছানো, একটা কভার বিহীন বালিশ,পায়ের কাছে কাঁথার মত কিছু একটা দলা হয়ে পড়ে আছে কিন্তু কাপড়ের চিহ্নটুকুও দেখা যাচ্ছে না কাঁথা দুটির শরীরে। মনে হচ্ছে কতবছর সেলাই পড়েনি এই কাঁথায়।
নববধুটি বিছানায় বসতেই নাকে বোঁটকা গন্ধ পাচ্ছে কাঁথা বালিশ থেকে। তবুও এই বিছানায় শুতে হলো তাকে। পায়ের নিচের কাঁথাটা টান দিয়ে জড়াতে গিয়ে মেয়েটির এক পা ছেঁড়া জায়গা দিয়ে বাহিরে বেরিয়ে গেলো। নিচের কাঁথাটাও ছোট হওয়ায় পায়ের দিকটা খালিই ছিলো।
দিন মাস বছর কখন যে এই অবস্থায়ই চলে যাচ্ছে সে টেরই পায় না। বিছানা কাঁথার মতই জির্ণ শির্ণ হয়ে গেছে তার তাবৎ জীবন। অবশ্য এ নিয়ে তার কোনো অভিযোগও ছিলো না। জগতের যত অভিযোগ অনুভূতি সব লীন হয়ে গেছে এক থালা ভাতের কাছে।