গল্পে নীলাঞ্জন কুমার

পরিনতি
বন্দনার তখন বয়স কম। কফিহাউস ,কবিতা, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় , স্বামী শাশুড়িকে নিয়ে দিন কাটছে।নানান কবি সম্মেলনের আমন্ত্রন লিপিতে তার নাম শোভা পাচ্ছে । বাংলা আকাদেমির এক কবিতা পাঠের আসরে সে কবিতা পড়ে নেমে আসতেই এক মাঝবয়সী ভদ্রলোক তার সামনে অটোগ্রাফ খাতা বাড়িয়ে দিল ।বন্দনা খুশিতে ডগমগ । অটোগ্রাফের পর আলাপ পর্ব শুরু হল ।
ভদ্রলোকের নাম নেপাল পাল। বালিগঞ্জে বাস। বন্দনার কবিতা তিনি আগে পড়েছেন , মুগ্ধ হয়েছেন, এই প্রথম তাই তিনি যেচে আলাপ করলেন। নেপাল বাবুর আবদারে বন্দনা কাগজে লিখে দিল ঠিকানা।
কিছুদিন পর বন্দনা চিঠি পেল নেপালের । তাতে মূল কথা, নেপালের ঘুম নেই বন্দনার জন্য, সে তার বাড়িতে আসতে চায়।
আরো কিছুদিন পর নেপাল সত্যি সত্যিই বন্দনার বাড়িতে এলো । বন্দনা তখন বাপের বাড়িতে । শাশুড়ির সঙ্গে গল্প করে বেরনোর সময় বৃষ্টি এলে নেপালকে তিনি ছাতা দিলেন। আবার আসতে বললেন।
এরপর নেপালের চিঠি এলো আবার, সঙ্গে কুপ্রস্তাব । বন্দনা কাউকে কিছু বললো না।
ছাতা দেবার অজুহাতে নেপাল বন্দনার বাড়িতে এলে
বন্দনা তাকে হাসিমুখে বৈঠকখানায় বসালো।তারপর দিল জল। নেপাল জল খেয়ে বন্দনার হাতে ছাতা দিলে বন্দনা সেই ছাতা দিয়ে নেপালকে বেদম মারতে মারতে অশ্রাব্য গালিগালাজ দিতে লাগলো। নেপাল হতচকিত ।
তারপর সম্বিত ফিরলে ঘর থেকে দে দৌড় । বলা যায় এক নিমেষে বন্দনার চোখের থেকে মিলিয়ে গেল ।
আজ প্রায় ত্রিশ বছর বাদে প্রখ্যাত কবি বন্দনা রায়
তার স্মৃতিকথা লিখতে গিয়ে একথা মনে পড়লে , হাসতে হাসতে বিছানায় গড়িয়ে পড়লো।