বর্ষাকাল ! ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়ছে ।পথে ঘাটে লোকজন একেবারেই নেই ! ঘুটঘুটে অন্ধকার ! লোডশেডিং হয়েছে । আজিম বছর চারেক পর মামাবাড়িতে এসেছে । রিক্সা না পেয়ে বাস থেকে নেমে গ্রামের পথে হাঁটতে শুরু করে । হাঁটতে হাঁটতে ছোটবেলার কত স্মৃতি মনে পড়ে যায় ।শৈশব , কৈশোর তার মামাবাড়িতে’ই কেটেছে । বর্তমানে সে কর্মসূত্রে সপরিবারে কলকাতায় থাকে । বাড়ির চাকর বংশী তাকে কোলে পিঠে মানুষ করেছে ,আগলে রেখেছে । একবার আগুনে ঝাঁপ দিয়ে আজিমকে সে বাঁচিয়েছিল।দুটো হাত তার আগুনে ঝলসে গিয়েছিল ! তবু হাসিমুখে বলেছিল ,আজিম কে রক্ষা করার দায়িত্ব আমার ! বড়কর্তাকে (বড় মামা) কথা দিয়েছি !
আজিম ভাবে ,কে জানে কেমন আছে বংশী কাকু ! প্রচণ্ড শব্দে কোথাও বাজ পড়লো ! আলো আঁধারি পথে আজিম বাড়ির পথ ভুল করছিল ! হঠাৎ স্পষ্ট দেখলো বংশী কাকু লাঠি নিয়ে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে !পথ দেখিয়ে বাড়ির
দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয় । এবার আজিম বলে, তুমি ভালো আছো বংশী কাকু ! তোমাকে কতদিন পর দেখছি ! বংশী বলে ,হুম ! বাছা ! তোমার পথ চেয়ে জীবনটাই শেষ হয়ে গেল!তুমি ভুলপথে যাচ্ছিলে ।তাই আসতে হল! নিজের দায়িত্ব তো আর ভুলতে পারি না !এই বলে কোথায় যে হারিয়ে গেল!
দরজায় ধাক্কা দেয় আজিম । মামা,মামি সকলে বেরিয়ে আসে । আজিম বলে ,বংশী কাকু তাকে পৌঁছে দিয়ে গেছে ! বড়মামা বলেন , আশ্চর্য ! সে তো গতবছর বজ্রপাতে মারা গেছে !তবে মরেও সে নিজের দায়িত্বের কথা মনে রেখেছে !