|| দার্শনিক ভলতেয়ার || জন্মদিনের স্মরণলেখায় মৃদুল শ্রীমানী

Image processed by CodeCarvings Piczard ### FREE Community Edition ### on 2018-11-14 08:20:05Z | http://piczard.com | http://codecarvings.comÿÿÿø«›G³U

আজ দার্শনিক ভলতেয়ারের জন্মদিন

সাম‍্য মৈত্রী স্বাধীনতার যে বাণী নিয়ে ফরাসি বিপ্লব এসেছিল, তার অন‍্যতম চিন্তানায়ক ছিলেন ভলতেয়ার। সে অবশ‍্য তাঁর কলমের নাম বা ছদ্মনাম।
মহান দার্শনিক চিন্তাবিদ লেখক ভলতেয়ার ১৬৯৪ সালে, ২১ নভেম্বর তারিখে ফ্রান্সের পারী শহরে জন্মেছিলেন। তিরাশি বছর বয়সে, ১৭৭৮ সালের ৩০ মে তারিখে, ওই পারী শহরেই ভলতেয়ার প্রয়াত হন।

ভলতেয়ার নামে বিশ্ববন্দিত হলেও, ওঁর প্রকৃত নাম ছিল ফ্রাঙ্কয়েস-মারী আরুয়েৎ। রাজনৈতিক দার্শনিক হিসেবে সর্বোচ্চ খ‍্যাতি পেলেও তাঁর সুগভীর সাহিত্যিক ব‍্যক্তিত্বের নিদর্শন ধরা আছে কাঁদিদ, মেমনন, ভিসন দে বাবুক প্রভৃতি গ্রন্থে। শিক্ষাতত্ত্ব নিয়ে তাঁর অসামান্য চিন্তা লিপিবদ্ধ আছে লেটার দে আকাদেমি বইতে।

ছোটবেলায় নাম ছিল জোজো। ছোট্ট জোজোর বাবা চেয়েছিলেন, ছেলে তাঁর আইনজীবী হোন। জোজো তা চান নি। তিনি ভেবেছিলেন যে লেখক হবেন। স্কুল ছাড়ার সময়ই জোজোর ওই সিদ্ধান্ত।
বাবা পাঠালেন এক নোটারি আইনজীবীর কাছে শিক্ষা নবিশি করতে। জোজো ওপর ওপর দেখায় যে সে কাজ শিখছে, আসলে লুকিয়ে লুকিয়ে কবিতা লেখে। প্রথম থেকেই জোজোর কবিতা লেখার হাতটি ছিল ভাল।
বেগতিক দেখে বছর ঊনিশের জোজোকে বাবা রাষ্ট্রদূতের সচিবের কাজ জুটিয়ে দিয়ে নেদারল্যান্ডসে পাঠিয়ে দিলেন। সেখানে গোলমাল পাকালেন ছেলে। কি গোলমাল? না, প্রেমে পড়লেন এক রিফিউজি মেয়ের। তাও কেমন রিফিউজি? না, প্রোটেস্টান্ট রিফিউজি। ভদ্রলোকের ছেলে হয়ে রিফিউজি মেয়ের সাথে প্রেম? ঢি ঢি পড়ে গেল। তাড়া খেয়ে ফিরে এলেন তিনি।
ভলতেয়ার রাজনীতির দর্শন ছাড়াও ইতিহাসের দার্শনিক বিচার বিশ্লেষণ করেছেন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ভাবনা বিকাশের জন‍্য তিনি সুপরিচিত।
১৭১৮ সালে ফ্রাঙ্কয়েস-মারী আরুয়েৎ নিজের নাম রাখলেন ভলতেয়ার। তখন বছর চব্বিশের যুবক। সরকারের নানাবিধ অপকর্মের তীব্র প্রতিবাদ করতে সিদ্ধহস্ত এক নওজোয়ান।

বিজ্ঞান বিভাগে গভীর আগ্রহ ছিল তাঁর। এক অনুরাগিণী জুটিয়ে নিয়ে চুটিয়ে পড়াশুনা করতেন। আর করতেন বিজ্ঞান নিয়ে হাতে কলমে চর্চা, পরীক্ষা নিরীক্ষা। খুব ভালবাসতেন আইজ‍্যাক নিউটনের বৈজ্ঞানিক গবেষণা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করতে। একটা ব‌ই লিখে ফেললেন, এলিমেন্টস অফ দি ফিলজফি অফ নিউটন।
সঙ্গিনীকে নিয়ে যেন আগুন নিয়ে খেলতেন জোজো। আগুন জিনিসটা ঠিক কি তা বুঝতে চাইতেন। আর বুকের ভিতর, মেধা ও মননে জ্বালতেন আগুন।
রোমান ক‍্যাথলিক চার্চের দৃষ্টিভঙ্গির বিরোধিতা করেন, খ্রীষ্টধর্মেরও বিরোধিতা করেন, আর বাকস্বাধীনতার পক্ষে কথা বলেন। বলেন ধর্মপালন যার যার ব‍্যক্তিগত‌ ব‍্যাপার। বলেন চার্চের সাথে রাষ্ট্রকে গুলিয়ে দেওয়া চলবে না। চার্চ আর রাষ্ট্র দুটো জিনিস। তাদের আলাদাই রাখতে হবে।

ভলতেয়ারের ছিল একটা খাঁটি কবি মন। মাত্র চব্বিশ বৎসর বয়সেই তাঁর পদ‍্যে লেখা একটি ট্রাজেডি ফ্রান্সের কমেডি ফ্রানকয়েস এ মঞ্চস্থ হয়েছিল। ততদিনে তিনি ষোড়শ শতাব্দীর ফ্রান্সের ধর্মীয় গৃহযুদ্ধ নিয়ে একটা মহাকাব‍্যিক রচনা তৈরি করে ফেলেছেন। সেই কবিতায় তিনি রাজা চতুর্থ হেনরিকে উজ্জ্বলভাবে আলোকিত করেন। তিনি দেখান যে, চতুর্থ হেনরি প্রটেস্টান্ট মতবাদ থেকে ক‍্যাথলিক মতবাদে পরিবর্তিত হয়ে দেশে শান্তি স্থাপনা করেন। জাতীয় গাথা লেখার ছলে তিনি প্রকৃতপক্ষে দেখিয়েছিলেন ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা কিভাবে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাধিয়ে তোলে।

ব‍্যক্তিত্ব গড়ে ওঠার একেবারে গোড়ার সময় থেকেই ভলতেয়ার তাঁর ধর্মীয় বিশ্বাস সম্পর্কে স্পষ্টবাক ছিলেন। তিনি নিরীশ্বরবাদী নাস্তিক ছিলেন না। তিনি ভাবতেন দেবতাদের উপর যৎসামান্য মাত্রায় বিশ্বাস থাকলে সামাজিক সংহতি ও সুস্থিতি রক্ষায় সুবিধা হয়। ভলতেয়ার ভাবতেন যে, ঈশ্বর এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড তৈরি করেছেন, মানুষের মধ্যে শুভ অশুভের ধারণা ঢুকিয়ে দিয়েছেন, আর তারপর ঈশ্বরের আর কিছু করার ছিল না। ঈশ্বর চুপচাপ গালে হাত দিয়ে বসে আছেন।
এই যে ধারণাটা, এটাকে আমরা যুক্তিবাদী ধর্ম বলতে পারি। অষ্টাদশ শতকে একেই প্রাকৃতিক ধর্ম বা দ্বৈতবাদ বলা হত। এরসাথে অতীন্দ্রিয় বিদ‍্যা, পারলৌকিক জ্ঞান বা অধ‍্যাত্মতত্ত্বের কোনো সম্পর্ক নেই। যুক্তিবাদী মানুষ হিসেবে ভলতেয়ার ধর্মমোহ, ধর্মীয় উন্মাদনা ও মৌলবাদকে অপছন্দ করতেন। পৌত্তলিকতাও ছিল অপছন্দের। ঘৃণা করতেন কুসংস্কারাচ্ছন্নতাকে। যে সাধারণ মানুষ ধর্মতত্ত্বের অ আ ক খ টুকু জানে না, তারা যখন ধর্মের নামে মারামারি খুনোখুনি করে, দাঙ্গা বাধায়, তা দেখে ভলতেয়ারের বিবমিষা হত। যারা ধর্মভীরু অতি সাধারণ মানুষের সহজ আবেগকে খুঁচিয়ে বিষিয়ে তুলে অশান্তি পাকিয়ে তুলে নিজেদের ক্ষমতা ও দাপট অক্ষুণ্ন রাখতে চায়, সেই ধর্মব‍্যবসায়ী পাদ্রি পুরুত মোল্লাদের ভলতেয়ার সাংঘাতিক ঘৃণা করতেন। ভলতেয়ার তেমন ধর্ম চাইতেন, যেখানে চার্চ মন্দির মসজিদের কোনো ভূমিকা নেই।
ওই যে কথার কেতায় চতুর্থ হেনরির ক‍্যাথলিক ধর্মগ্রহণ করাকে আলোকিত করলেও, ধর্মীয় পাণ্ডারা কিন্তু ভলতেয়ারের চাতুরি ধরে ফেলেছিলেন। ক‍্যাথলিক ধর্মীয় নেতারা চতুর্থ হেনরিকে নিয়ে ভলতেয়ারের কাব‍্যগাথা লা হেনেরিয়েদ ফ্রান্সে প্রকাশিত হতে দিলেন না। তখন ভলতেয়ার স্থির করলেন যে লণ্ডন থেকে তিনি ওই বই প্রকাশ করবেন। সেই লক্ষ্যে ১৭২৬ সালে তিনি ইংল‍্যাণ্ডে পাড়ি দিলেন। ব‍্যবসার রাস্তা তৈরি করবেন, এই জন‍্যে ইংল‍্যাণ্ড যাচ্ছেন, এমন প্রচার করলেও তা হয়ে দাঁড়াল আর কিছু। ঘটনাচক্রে সেখানে তিনি আড়াইটি বছর রয়ে গেলেন। ইংরেজি ভাষা শিখলেন। সেখানকার লেখক ও রাজনীতিবিদদের সাথে পরিচিত হলেন এবং প্রটেস্টান্ট ইংরেজি সংস্কৃতিকে পছন্দ করলেন। ইংল‍্যাণ্ডে বসবাসের অভিজ্ঞতা নিয়ে ইংরেজি ভাষায় তিনি একটা বই লিখে ফেললেন, লেটার্স কনসার্নি‍ং দি ইংলিশ নেশন। ১৭৩৩ সালে তা বই হয়ে প্রকাশ পেল। এই না দেখে ফরাসি রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ আতঙ্কিত হলেন এবং বইটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল। একটুর জন‍্য ভলতেয়ার কারাবাস থেকে রেহাই পেলেন।
এই লেটার্স কনসার্নি‍ং দি ইংলিশ নেশন বইতে তিনি বেশ বুদ্ধিদীপ্ত ও মজাদার ধাঁচে কিছু ব‍্যঙ্গ বিদ্রূপ মিশিয়ে ইংল‍্যাণ্ডের সমাজ ও সংস্কৃতির একটা সহজ সরস ছবি পেশ করলেন। তাতে তিনি ইংল‍্যাণ্ডের ধর্ম, রাজনীতি, বিজ্ঞানচর্চা এবং সাহিত্য, এই সবকিছুকেই টানলেন।
উদাহরণস্বরূপ, ইংল‍্যাণ্ডের বাণিজ্যকেন্দ্র রয়‍্যাল এক্সচেঞ্জকে নিয়ে ভলতেয়ারের কলম কিভাবে মুখর হয়েছে, দেখা যাক। লিখছেন,
“ওই যে দ‍্যাখো ইংল‍্যাণ্ডের রয়‍্যাল এক্সচেঞ্জ, ওখানে সকল জাতির ব‍্যবসাদার লোকসাধারণের উপকারের জন‍্য একখানে জড়ো হয়েছে। ওখানে ইহুদি আছে, ওখানে মুসলিমরা আছে, আর আছে খ্রিস্টান। ওরা ওখানে ব‍্যবসায় এতটাই মিলে মিশে আছে যে, মনে হয় যেন ওরা একই ধর্মের লোক। কোনই ফারাক নেই। ওরা কাউকেই পাষণ্ড বা বিধর্মী বলে গাল দেয় না। তবে দেউলিয়া লোককে এরা সবাই বড্ড অপছন্দ করে। দেউলিয়া লোকই যেন এদের কাছে বিধর্মী। এখানে প্রেসবিটারিয়ানরা অ্যানাব‍্যাপটিস্টদের কাঁধে হাত রেখে চলে। চার্চম‍্যান কোয়েকারদের কথায় ভরসা রাখে। এই যে নির্ঝঞ্ঝাট নির্বিবাদ মানুষগুলো দিনের শেষে কেউ সিনাগগে ঢুকে পড়ে, আবার কেউ বা মদের গ্লাস নিয়ে বসে। ধরো, এই এখানে একটা লোক ব‍্যাপটাইজড হচ্ছে। আবার ওই একটা লোক নিজের ছেলেকে ছুন্নত দেওয়াচ্ছে। কেই আবার দ‍্যাখো গে, নিজের ছেলের মাথার উপর বিড়বিড় করে কি সব মন্ত্রতন্ত্র পড়ছে। এত কিসিমের ধর্ম এখানে আছে, তাই রক্ষে। মোটে একখানা ধর্ম রাজ করলে যা খুশি তাই করতে রাজা বাধা পেত না। আবার দু রকম ধর্ম থাকলে একে অপরকে মারামারি খুনোখুনির অন্ত থাকত না। গলাকাটার বাড়বাড়ন্ত হত। এত রকমের ধর্ম এখানে একযোগে আছে তাই বাঁচোয়া। সবাই মিলে সুখে শান্তিতে বসবাস করছে। ”

লেখাটায় চোখ বোলালেই মালুম হয় যে, ধর্মীয় বিভেদ নিতান্তই মনগড়া ব‍্যাপার। বানিয়ে তোলা তুচ্ছ জিনিস দিয়ে মানুষে মানুষে বিভেদের পাঁচিল তোলা হয়েছে। এই রয়‍্যাল এক্সচেঞ্জে ব‍্যবসা করে খাওয়াটাই মূল লক্ষ্য বলে, সবাই একজোট হয়ে শান্তিতে আছে। বহু ধর্মের অস্তিত্বই শান্তি বজায় রেখেছে।
আসলে, এই ছলে ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষকে ভলতেয়ার বেশ একহাত নিলেন। কেননা সেখানে ক‍্যাথলিকরা একচেটিয়া ক্ষমতা দখল করে আছে।

বিজ্ঞানচর্চা ও বৈজ্ঞানিক বোধকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার চেষ্টা সব সময়েই ধর্মমোহের বিপ্রতীপে কাজ করে। আইজ‍্যাক নিউটন ও তাঁর যুগান্তকারী আবিষ্কার মহাকর্ষকে ফ্রান্সে পরিচিত ও জনপ্রিয় করেন ভলতেয়ার। আজ স্কুলের বাচ্চারাও জানে নিউটন বাগানে আপেল গাছ থেকে আপেল পড়তে দেখে মহাকর্ষের ভাবনা ভেবেছিলেন। কিন্তু এই আপেল পড়ার গপ্পোটা ভলতেয়ার জনপ্রিয় করেছিলেন। নিউটনের ভাইঝির কাছে তিনি এই গল্পটা শুনেছিলেন, আর তারপর গল্পটাকে এমনভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে পরিবেশন করলেন, যাতে মানুষের মনে মহাকর্ষ ও ভারাকর্ষণের ধারণাকে সহজে বোঝার মতো পরিবেশ তৈরি হয়।

মহাকর্ষ বা ভারাকর্ষণের তত্ত্ব এবং গতিবিদ‍্যা নিয়ে নিউটনের অবদান অনেকেই ছোটবেলা থেকে জানেন। কিন্তু আপেল ফল পড়তে দেখে ভারাকর্ষণের তত্ত্ব আবিষ্কার করা ও গতিবিদ‍্যা নিয়ে ওইমাপের সিদ্ধান্ত প্রকাশ করা বেশ একটু আশ্চর্যজনক। মুশকিলের কথা হল, নিউটন নিজেও গল্পের ছলে আপেল পড়ার কথাটা বলতেন। আপেলের গল্পটি আরো জনপ্রিয় করে দিয়েছেন এই দার্শনিক। ভলতেয়ার গল্পটি শুনেছিলেন নিউটনের ভাইঝি ক‍্যাথারিণ বারটনের কাছে। আর ভলতেয়ারের ইচ্ছে ছিল নিউটনের এই অসামান্য মূল‍্যবান গবেষণার কথা সাধারণ‍্যে ছড়িয়ে পড়ুক। সেই লক্ষ্যে তিনি এই গল্পটিকে জনপ্রিয় করেন। এইসব গপ্পো কথা ভলতেয়ার তাঁর ১৭২৭ সালের এসেজ অন এপিক পোয়েট্রি ব‌ইতে লিখেছেন। ততদিনে নিউটন প্রয়াত।
একেবারে সাধারণ মানুষও বিজ্ঞান বুঝবে, এবং প্রশ্ন তুলবে আর এইপথে মানসিক জড়তা চিন্তার বিশীর্ণতা কাটবে, এইভাবে ভাবতেন ভলতেয়ার।
আর এক মহান দার্শনিক জাঁ জাক রুশোর প্রতি অনেক দিন ধরে বিদ্বিষ্ট ছিলেন ভলতেয়ার। রুশোর লেখালেখির বিরূপ সমালোচনা করার কোনো সুযোগই তিনি ছাড়তেন না। কিন্তু বাস্তবে বড় মনের মানুষ হবার জন‍্য‌ই এবং মুক্তচিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সমর্থক ছিলেন বলেই ভলতেয়ার যখন শুনলেন, রুশোর অসাধারণ গ্রন্থ সোশ্যাল কনট্র‍্যাকট জেনিভায় প্রকাশ‍্যে পোড়ানো হয়েছে, তখন তিনি সেই দুষ্কর্মের প্রতিবাদ করে বলেছিলেন যে, একজনের ব‌ই পোড়ানোর মানে হল যে, তাঁর যুক্তির সমুচিত জবাব দেবার সামর্থ্য ও যোগ‍্যতাটা আমাদের নেই। ১৭৬৫ সালে আইদিস রিপাবলিকেইনস নামে নামস্বাক্ষরবিহীন একটি রাজনৈতিক প্রচারপত্রে ভলতেয়ার এ কথা লিখেছিলেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, ‘শিকলদেবীর ওই যে পূজাবেদি, চিরকাল কি রইবে খাড়া?’ এই ভাবেই যেন তাঁর অনেক আগেই ভলতেয়ার বলেন, It is difficult to free fools from the chains they revere. রহস্যময় আধ‍্যাত্মিক মতবাদ যারা মানুষের মধ্যে ছড়াতে চায়, তারা যে অতি সহজেই সরল সাদামাটা মানুষকে দাঙ্গায় নামাতে পারে, এভাবে সতর্ক করতেন ভলতেয়ার। বলেছেন, Those who can make you believe absurdities can make you commit atrocities.

ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে রসিকতা করে ভলতেয়ার বলেন God is a comedian playing to an audience too afraid to laugh. ব‍্যক্তির মতপ্রকাশ ও মতপার্থক্যজনিত দ্বন্দ্ব ও সংঘর্ষ সমাজে কী সংকট তৈরি করে বোঝাতে তিনি বলেন Opinion has caused more trouble on earth than plague or earthquakes. তবে আমার কাছে তাঁর সেরা কথাটি হল Common sense is not so common. আমাদের মতো অতি সাধারণ মানুষের মধ্যে যদি কমন সেন্স বা সহজ বুদ্ধির অভিষেক ঘটে, তাহলে পৃথিবী বদলাবে।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।