• Uncategorized
  • 0

|| নারীতে শুরু নারীতে শেষ || বিশেষ সংখ্যায় মনামী সরকার

স্বাধীন তিস্তা

বাবা মার একমাত্র মেয়ে তিস্তা।রূপে গুণে অতুলনীয়।এই বছরই ওর পি.এইচ.ডি টাও কমপ্লিট হয়ে গেল।অনিমেষের সাথে ওর সম্পর্কটা দীর্ঘ দশ বছরের অনিমেষ পেশায় ইঞ্জিনিয়ার।ওর পরিবারটা ও ছিল বেস সম্ভ্রান্ত ও আধুনিক মনোভাবাপন্ন তিস্তার ইচ্ছে ছিল, আগে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে তারপর বিয়ে করবে।কিন্তু অনিমেষের বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে অনিমেষ তিস্তাকে এই বলে আশ্বস্ত করে, ‘আমাদের বাড়িতে তোমাকে সব রকম স্বাধীনতাই দেওয়া হবে’ তুমি বিয়ের পরেও চাইলে চাকরি করতে পারবে।যথারীতি তিস্তা অনিমেষের বিয়েটা হয়ে গেল বিয়ের পর তিস্তা বেশ ভালই আছে বেশ গুছিয়ে সংসার করছে,অনিমেষ ওর কথা রেখেছে তিস্তা কে দিয়েছে সব রকম স্বাধীনতা।তিস্তা ইচ্ছেহলে ওর বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যায়,নিজের মত করেই সংসার সামলায়,বিয়ের পর বেশকিছু চাকরির পরীক্ষা ও দিয়েছে। যখন মন চায় বাবা-মায়ের সাথে দেখা করতে আসে বাড়িতে বিয়ের একটা বছর যেতেই তিস্তার কোল আলো করে আসে ফুটফুটে একটা মেয়ে সংসার, বাচ্চা সবটা সামলে ওর আর চাকরিটা করে ওঠা হয়নি।কিন্তু অনিমেষ ওকে যথেষ্ট আর্থিক স্বচ্ছলতা দিয়েছিল সব মিলে তিস্তার সুখী জীবন।মাঝে মাঝে ও শাশুড়ি কে খুব গর্ব করে পাড়া প্রতিবেশী,আত্মীয় স্বজনের কাছে বলতে শুনেছে,আমরা বাবা আমাদের বাড়ির বউকে সবরকম স্বাধীনতা দিয়েছে। আমাদের বাড়ির সবাই খুব উদারচেতা মানুষ,কথাটা সত্যি হলেও তিস্তার কানে খুব বাজতো।তিস্তার বাবা-মা ,আত্মীয়-স্বজন সবাই বলে ,ভাগ্য করে একটা বর পেয়েছিস দেখতো তোকে কত স্বাধীনতা দিয়েছে।তিস্তা কোন উত্তর দেয় না ,শুধু একটু মুচকি হাসে। অনিমেষ এমনিতে খুব শান্ত স্বভাবের,কিন্তু যখন খুব রেগে যায় বা ওদের মধ্যে কোন কিছু নিয়ে গন্ডগোল বাজে খুব গম্ভীর হয়ে তিস্তাকে বলে,পারতে এতকিছু করতে যদি না দিতাম আমি তোমায় এত স্বাধীনতা।তিস্তা চুপ করে থাকে সত্যি ও অনিমেষ আর ওর পরিবারের কাছে খুব কৃতজ্ঞ তবুও একলা দুপুরে কখনো কখনো ও ভাবে নারীর স্বাধীনতা এখনো নির্ভরশীল পুরুষের হাতে,দেশ স্বাধীনের এতগুলো বছর পরেও একটা মানুষকে স্বাধীনতা দেয় অন্য একটা মানুষ।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।