|| অণুগল্প ১-বৈশাখে || বিশেষ সংখ্যায় মৌসুমী রায়
by
·
Published
· Updated
ভালবাসার চোখ
“জহীরুল,বাপ,ইট্টুস পানি দাও”
“আব্বা আবার শরীল খারাপ লাগতেছে? হাকিম চাচারে খপর দেব?দাওয়া দে যাবেনখন।”
অন্ধ হওয়াতক বাপ ঘর অন্ধকার করে রাখে।
“না বাপ,ব্যস্ত হতি হবেক না।তুমি আমার মাতার কাছে বস।দুটো পরানের কতা কই।
চুয়াত্তর সনে বন্যা হল।নদী ফুঁসে উটেলো,তাঁর মাতন দ্যাকে কে!সেই জোয়ারে ভাসতি ভাসতি মোর দুয়ারে এক রূপমতী কণ্যে আয়লো।বেবাক বেহুঁশ।বুকের কাপড় নাই,হাতপাও কাটিছে দেদার।কনে থেকে আয়লো,কনেই বা যায়! পানি দিলাম ছিটোয়ে ছিটোয়ে।আইস্তে আইস্তে হুঁশ এল।বেতাল জ্বর তার গায়ে।আমিও পুড়তিছি বাপ।
ও মেইয়ের সব্বাঙ্গে য্যান আগুন খেলতেছে।তবু ছুঁই নাই!ডর লাগেলো ,যদি ভিনজাত হয়!”
জহীরুল ব্যস্ত হয়ে বাপকে নিরস্ত করছে,
“একন এসপ থাক আব্বু”
“না বাপ।সকলডি জানো তুমি। আমি যে মরণের গন্ধ পাই!সে মেইয়েরে ধরি নাই,ছুঁই নাই।তবুও তারা ফিরায়ে নেলো না।শ্যাষে মৌলভী আসি নিকে করায়ে দেলো।বছর ঘুরলি তুমি আলে বাপ।বড়ডি হলে।
আমার রক্তে চিনি আসেলো। চক্ষু গেল…”
দরজাটা ঈষৎ ফাঁক করে ক্ষয়াটে নিতান্ত সাধারন চেহারার এক মহিলা পান্তাভাতের সানকি হাতে ঘরে ঢুকলো।
আলো এল ঘরে।
জহীরুল ডাকল, আম্মা…