• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে মৌসুমী নন্দী (যাপন চিত্র – ২০)

যাপন চিত্র – ২০

আতঙ্ক এক ব্যাধি

আজকাল সোস্যাল মিডিয়া বলো, সংবাদ মাধ্যম বলো ঘরে বাইরে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সব জায়গায় একটাই মাত্র আলোচনা ৷ এ যেন ভয় দেখানোর কমপিটিশন চলছে কে কত ভয় দেখাতে পারে ৷ জীবন যুদ্ধের প্রতিটি ক্ষেত্রেই মনোবলটা সবার আগে জরুরী ৷ কিন্তু আগেই যদি মানসিক ভাবে একটা মানুষকে দুর্বল করে দেওয়া যায় তাহলে তার জেতা যুদ্ধও হেরে যাবার প্রবল সম্ভাবনা থাকে ৷ তাই বলছি মানুষকে আতঙ্কিত করবেন না বরং সহায়তা করুন পজেটিভ গল্প শোনান ৷ টিভি খুললেই যেভাবে দিনরাত করোনা নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা অনুষ্ঠান চলছে আর টিভির উল্টোদিকের মানে সামনে বসা লোকটি তো মরার আগেই আতঙ্কেই মরা য়াবেন ৷আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ আপনারা মনোবল বাড়াতে না পারলে তা ভাঙবেন না। শুধুমাত্র বিজ্ঞাপন বিরতিতে যাওয়ার সময় “বাইরে বেরোলে মাস্ক পরুন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন, সচেতন থাকুন” এর ফাটা রেকর্ড বাজাবেন আর সারাদিন ধরে শুধু গণচিতা, রোগীদের ভরা হাসপাতাল, দিশেহারা পরিবার, অসহায় পরিবারের ঘুরে বেড়ানো, ক্ষুধার্ততায় ভোগা – এইসব সারাদিন ধরে দেখিয়ে যাবেন। আপনারা আপনাদের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এতটা ভয় তৈরি করছেন যে একজন সুস্থ ব্যক্তিও অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
ভোট উৎসব যতদিন ছিল ততদিন সারাদিন ধরে
একই রেকর্ড বাজিয়ে গেলেন কোন দলের কারা কাকে গালা গালি দিলো কারা কাকে খুন করলো এবং কার জনাসভায় কত লোক হলো এই দেখিয়ে গেলেন।
যেই সব মিটে গেল ওমনি মানুষ কে ভয় দেখাতে শুরু করে দিলেন।এবার একটু নিঃস্বার্থ ভাবে নিজের দায়িত্ব পালন করুন ।
আমরা সবাই জানি যে একটি মহামারী চলছে, এটাও জানি যে পরিস্থিতির উপর নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে।
সমস্যাগুলি সমাধান করতে সহায়তা করুন।
* সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের সাক্ষাৎকার দেখান।
* অক্সিজেন সিলিন্ডার কোথায় পাওয়া যায় তার সন্ধান করুন ও জানান।
* প্লাজমা দাতাদের একটি ডাটাবেস তৈরি করুন।
* কোন হাসপাতালের কটা বেড ফাঁকা রয়েছে তা বলুন।
* অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার বিশদ সরবরাহ করুন।
* পরিষেবা দিতে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করুন।
* কোথায় কি সুবিধা পাওয়া যায় সে সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করুন।
* স্থানীয় পরিষেবার কেন্দ্র গুলির যোগাযোগ নম্বর প্রতিদিন প্রচার করুন।
* জনগণের প্রতিনিধিদের স্টুডিও তে বসিয়ে মিছিমিছি যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা না দেখিয়ে তাদের সমাজসেবার জন্য বাধ্য করুন।
* ডাক্তারদের ভয় দেখানো ইন্টারভিউ না দেখিয়ে কোথায় কোন ডাক্তারদের এই সময় পাওয়া যাবে, তার তথ্য দিন ।
এখন #অনেক করোনা রোগীই সুস্থ হওয়ার পর প্লাজমা দান করেছেন। আপনারা জানান প্লাজমা কি ! কিভাবে সাহায়্য করছে করোনা রুগীকে ৷ এই প্রসঙ্গে আপনাদের জানিয়ে রাখি প্লাজমা কী এবং কিভাবে কাজ করে ৷ রক্তের জলীয় অংশকে প্লাজমা বলে। কোনো ব্যক্তি ভাইরাস–ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হলে ৫ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে তার শরীরে জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি হয়। ফলে তার রক্তে এক ধরনের অ্যান্টিবডি তৈরি হয় এবং ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াকে নিষ্ক্রিয় করে তোলে ও এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়। কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত থেকে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাওয়া ব্যক্তির রক্তের প্লাজমায় এই অ্যান্টিবডি রয়েছে, যা সংগ্রহ করে কোভিড আক্রান্ত রোগীর শরীরে দিলে সাময়িক প্যাসিভ ইমিউনিটি তৈরি হয়। এই অ্যান্টিবডি সার্চ করোনা-২ ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে এবং রোগী সুস্থ হতে থাকে।’
কাজেই প্লাজমা থেরাপি খুবই কার্যকরী জয়একটি থেরাপি। এতে প্লাজমা দানকারীর বিন্দুমাত্র ক্ষতি হয় না। শুধু প্রয়োজন এক্টু সদিচ্ছার। তাই যারা বয়সে যুবক এবং করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়েছেন, তারা দয়া করে এগিয়ে আসুন। সবাই নিজের প্লাজমা দান করে আরেকজনকে সুস্থ করে তুলুন।
শুধু একবার চিন্তা করুন: আপনার শরীরের জলীয়কণার বিনিময়ে বেঁচে যেতে পারে সম্ভাব্য মৃত্যুমুখী একজন যাত্রী। এর চেয়ে ভালো অনুভূতি আর কি হতে পারে! সারা জীবনএই অনুভূতিটা থাকবে আপনার।
পরিশেষে আবারো বলবো আতঙ্কিত হবেন না ৷ মনে জোর রাখবেন ৷ সতর্কতা অবশ্যই গ্রহণ করবেন ৷ প্রয়োজন হলে সঙ্গে সঙ্গে সঠিক ডক্টরের সাথে যোগাযোগ করবেন ৷আমরা জয় লাভ করবোই এই মহামারী থেকে ৷ আরো একটা ভ্যাকসিনেশনের সুযোগ থাকলে অবশ্যই সেটা নিয়ে নেবেন ৷ ভালো থাকবেন সকলে৷
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।