উত্তর 24 পরগনা জেলার গোবরডাঙাতে নিবাস।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় প্রথম মাস্টার ডিগ্রি এবং
পরবর্তীতে নেতাজী সুভাষ ওপেন ইউনিভার্সিটি থেকে সেকেন্ড বার বাংলায়
মাস্টার ডিগ্রি।লেখালেখি, গান শোনা এবং গান করা পছন্দ করি। বিশেষ করে
রবীন্দ্র সংগীত ও আধুনিক। নেতাজী সুভাষ ওপেন ইউনিভার্সিটির বেঙ্গল
পার্টিশন বিষয়ক গবেষণার সঙ্গে যুক্ত আছি ।বাড়িতে প্রাইভেট পড়ানো হয়
,সঙ্গে একটি এনজিওতে সমাজসেবামূলক কাজ কর্মের সঙ্গে যুক্ত আছি। বাস্তব
সমস্যাকে লেখার মধ্যে বেশি ফুটিয়ে তুলতে পছন্দ করি। আনন্দলোক পত্রিকায়
দশটার অধিক ক্যাপশন প্রকাশিত হয়েছে।
১। পুতুল খেলা
সময় আমার মন্দ বলে কেউ নেই পাশে
সুখের সময় সকলেই ভ্রমরের ন্যায় আসে।
জীবন মানে সুখ- দুঃখ জীবন মানে ভাঙা-গড়া
এ জগতে কেউ কারো নয় মিথ্যা মায়ায় ভরা।
আমার বাবা আমার মা আমার মেয়ে আমার যা
পুতুল খেলা শেষ হলে কিছুই আর রইবে না।
এক একটা পুতুল মোরা খেলতে আসি জগতে
খেলা শেষ হলে পরে মোদের মনে রাখে কে?
মানুষ মোরা দেবতা নই করবো মৃত্যুকে জয়
জন্মিলে মরিতে হবে বিধির বিধানে পরাজয়।
ভাইয়ে ভাইয়ে মারামারি বাবা-ছেলে কাটাকাটি
ঐশ্বর্যের লোভে পড়ে সম্পর্কের মুখে লাথি ।
এ জগতের মানবজাতি মূর্খ বড় বিবেচক নয়
শ্মশানের চিতায় গেলে সবকিছুই পড়ে যে রয়।
কি নিয়ে এসেছো তুমি? কি নিয়ে যেতে চাও?
ছোট্ট সাদা কাপড় ছাড়া সবকিছুই ফেলে যাও।
জন্ম তোমায় দিল যারা দুঃখ কষ্ট দিও না
ইহকালে পরকালে সুখ তুমি পাবে না।
যা পেয়েছো যা করেছ তাতেই তুমি সুখী হও
ত্যাগের মন্ত্রে জীবন গড় সকলি সত্য কথা কও।
ভালো ধর্ম ভালো কর্ম ভালোর চোখে সবাই ভালো
অন্ধকার দূরে ফেলে জীবন প্রদীপে জ্বালাও আলো।
পুতুল খেলা শেষ হলে যেতে মোদের হবেই হবে
তোমার ভালো কাজের কথা জগৎবাসী কবেই কবে।
২। রজনী বিদায়
সেদিন ফাগুন মাস
বসন্তের এক পবিত্র দিনে
রজনীর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল কলেজে ।
বয়স সতেরো কিংবা আঠারো হবে,
রূপের লাবণ্য আমার চোখ ঝলসে দিয়েছিল।
এমন সুন্দরী আগে কখনো দেখিনি
অসাধারণের মধ্যেই সাধারণ সে।
আমার ত্রিশটি বসন্তে অনেককে ভালোলেগেছে,
কিন্তু এমনটি কেউ ছিল না ।
বান্ধবী পর্ণাকে প্রস্তাব নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেছিলাম
আশা-নিরাশায় কেটেছিল রাতটা,
ঘুমাতে পারিনি সেদিন,
পর্ণা বলার সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছিল।
তিন বছর রজনীর সাথে প্রণয় ছিল আমার
দুজনের চোখে অনেক রঙিন স্বপ্ন ছিল,
কিন্তু সুখ যে আমার ভাগ্যে সয় না।
হঠাৎ একদিন রজনীর চিঠি পাই
বাবা-মার ইচ্ছাতেই বিয়ে করছে সে।
চোখের জল বাঁধ মানে নি সেদিন,
চিঠির সাথে বিবাহের নিমন্ত্রণ কার্ডও ছিল
সইতে পারলাম না !
আগে অনেককে ভালোলাগলেও ভালোবেসেছি রজনীকেই,
মুহূর্তে জীবনকে মূল্যহীন মনে হয়েছিল
ক্ষনিকের জন্য নিজেকে শেষ করার সংকল্প নিই,
কিন্তু পারলাম না, আমি যে ব্যর্থ প্রেমিক
রজনীর ইচ্ছাকে পূরণ করতে রয়ে গেলাম।
বিয়ের দিন সকাল থেকে রজনীর বাড়িতে
গায়ে হলুদ নিয়ে যাওয়া, ফটো তোলায় আমি
রাতে বর নিয়ে আসা,কনের পিরি ঘোরাতেও আমি
বিয়ের খাবার আমার মুখ দিয়ে পেটে নামে নিই ।
ভোররাতে রজনীকে বিদায় দিয়ে বাড়ি ফিরি
প্রিয় হারানোর যন্ত্রনায় চিৎকার করে কেঁদে ছিলাম ।
মা বলেছিলেন– নিজের জীবনকে ভালো বাসতে শেখো
এমন দিন অনেকেরই আসে,একা কেন তুই !
আমরা কারা? তোর প্রিয়জন নই ?
দূর থেকে রজনীকে আশীর্বাদ করেছিলাম,
সুখী হোক ওরা
সুখী হোক।