• Uncategorized
  • 0

গদ্যের পোডিয়ামে মালা মিত্র

সুরামৃত

হ্যাঁ পান করি আমি,এতে আশ্চর্য হবার কি আছে?নিত্য আমি, তুমি, আমরা, সবাই কত কত পান পেয়ালা ভ’রে ভ’রে গিলছি তার ইয়ত্তা নেই।আমরা মেয়েরা শুধু নারী জন্ম অপবাদে বস্তু রয়ে গেলাম, তুমি মেয়ে, তুমি এটা কোরোনা, সেটা কোরোনা,এসব তোমাদের মানায় না, সমাজ তোমাকে পতিতা দেগে ছুঁড়ে দেবে আস্তাকুঁড়ে, সার্টল কক্ বানিয়ে এ কোর্ট থেকে সে কোর্ট তাড়িয়ে বেড়াবে,শুনতে শুনতে কান পচে গেল।
বৈধব্য বহন করে চলা মহিলা,সাদা শাড়ীর আড়ালে কি তার রঙচঙে প্রজাপতি মন মরে যায়?
তার অতলান্তের খবর কেউ কোনোদিন রাখে?
তার অন্তরাত্মা দুই হাত উঁচু করে বাঁচার আশায় তীব্র কান্না কেঁদে চলেছ, হাজার হাজার বছর, নির্দোষ মদ আর কতটুকু ভোলাতে পারে সে দুঃখ?
শত শত নারী অন্তর্দাহ পিপে পিপে গিলে খাচ্ছে অহরহ।
হাই, হেলো’র পিছনে, পাহাড় প্রমান লোহার রোড,ভাঙা বোতল,আর যত রকমের জঞ্জাল আছে, সব বহন করার ক্ষমতা রাখে ওই এক গর্ত।পুরুষ তাকে বলিনা, যে যাতনায় এক করে রেখেছে নারী জাতীর দিনরাত।
না শুভকামনা আসে না,স্রেফ আসে না ওই ছিঁনে জোঁক মার্কা পুরুষদের প্রতি।
আর ইনবক্স তো রীতিমতো পানশালা হয়ে উঠেছে,কেউ কেউ তো উজিয়ে ফেসবুক পর্যন্ত ধাওয়া করে।হা হা হা মেয়েরা আর মদ না খেয়ে যায় কোথায়?
‘পান করে রবি শশী অঞ্জলি ভরিয়া, সদা দীপ্ত রহে অক্ষয় জ্যোতি,নিত্যপূণ্য ধরা জীবনে কিরণে’,এমন পান ক’জন করতে পারে?
চোব্য চোষ্য লেহ্য পেয় , কথায় ই আছে,পেয় অর্থাৎ পান,পান না করলে তো গলা দিয়ে না নেমে এক প্রাণান্তকর অবস্থা, তাই নিয়ন্ত্রিত পান কখনো দোষের হতে পারে না, তবে কোনোকিছুই প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভাল নয়।
নব্য যুবতী যখন,’পিয়ে উচ্ছল তরল প্রলয় মদিরা,উন্ মুখর তরঙ্গিনী ধায় অধিরা,কার নির্ভীক মুর্তি তরঙ্গ রোলে, কলমন্দ্ররোলে’,
সে নদী কে দুচোখ ভ’রে দেখার মজাই আলাদা।
প্রেমিকা যখন প্রেমিক কে বলে,’এ দেহ ভৃঙ্গারে আছে যত মদ, ওগো প্রেমাস্পদ পিয় গো পিয়, আমার নয়নে নয়ন রাখি, পান করিতে চাও কোন অমিয়’, হ্যাঁ সে অমৃতভান্ডের, ‘শেষ নাহি যে, শেষ কথা কে বলবে’।
পেঁচি মাতাল নয়, অথচ পরিমিত মদ্যপান, শরীরের ক্লান্তি,ব্যথা বেদনায় পেনকিলারের চেয়ে বেশী কাজ করে,চেহারার ঔজ্জ্বল্য রক্ষায়,হার্টের স্বাস্থ্যে,মানসিক উদ্বেগে, হজমে সাহায্য করে অ্যালকোহল। উৎকন্ঠা কমিয়ে স্নায়ুকোষ গুলিকে শিথিল করাতে আ্যলকোহলের জুরি নেই।
না আমি মদের গুনোগান করতে বসি নি, সুস্থ মানুষ ও বেহেড মাতালের থেকে গর্হিত কাজ করেন,
তার চাইতে ভালবাসার সুধারস ব্যথা ভোলাতে কম কিসে?
‘এ কী সুধারস আনে,আজি মম,মনে প্রাণে’।
হ্যাঁ প্রেম পূজায় প্রকৃতি তে মগ্ন হই না কেন, যেখানে অশেষ ভান্ডার ভরা সুরামৃত, যা আঁজলা ভ’রে পান করলে,জাগতিক, মানসিক, ব্যথা বেদনা দূর হয়, এক পূর্ণ প্রাণের ছোঁয়ায় মেতে ওঠে চৌদিক।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।