T3 || আমি ও রবীন্দ্রনাথ || বিশেষ সংখ্যায় মৌসুমী মৌ
একান্তে ঠাকুর ও আমি
তোমাকে বিদ্বদজনের মতো বোঝার সাধ্যি নেই রবি ঠাকুর। আমি এক সামান্য গৃহবধূ। চার বছর বয়সে পাড়ার ফাংশানে তোমার সাথে প্রথম ভাব। তারপর আমিও বাড়ছি সাথে সাথে তুমিও۔۔۔
শিশু ভোলানাথ থেকে সঞ্চয়িতা,
আগুনের পরশমণি থেকে নিজস্ব গীতবিতান, এ পর্যন্তই আমার দৌড়।
ও হ্যাঁ, সিনেমায় ঋতুপর্ণর হাত ধরে চোখের বালি আর নৌকাডুবি।
তবে তোমার ওই গানে আমি বার বার নিজেকে খুঁজে ফিরি ۔۔۔
এ বাড়িটা বেশ পুরনো।
এখানে এখন আমার রোজ দিন শুরু হয় তোমার গান শুনে।
টবের গাছে… ভোরের স্নান….
সসপ্যানে বেড টি….
অফিসের ভাত…. কুটনোর কোলাজ।
তার সঙ্গে সঙ্গে এর মাঝে তুমি বয়ে চলো ‘হৃদয় আমার প্রকাশ হল
অনন্ত আকাশে’ ۔۔۔
শুনতে শুনতে অসাবধানে আঙুল…. যাক
ওসব প্রায় হয়!
বাজতে থাকে ‘কাঁদালে তুমি মোরে ভালোবাসারই ঘায়ে’…
গানটা শুনতে শুনতে
মশলার ঝাঁঝ চোখে জ্বালা ধরায়।
ক্ষীণ হেসে আঁচলে মুছে নিই সেদিনের রান্নায় তীব্র গানের ছোঁয়াচ।
কাজের ফাঁকে ড্রইংরুমে তোমার ছবির দিকে
চোখ পড়ে। তুমি দুষ্টু হেসে যেন বললে ‘তবুও শান্তি তবু আনন্দ’। আমি চমকে তাকালেম!
তুমি আবারও বললে,
‘আকাশের গায়ে কোনো দাগ লাগে?’
আমি বললাম, আকাশ! কোথায় আকাশ!
এই শিবতলা লেনের পুরনো স্যাঁতস্যাঁতে বাড়ির পুরু দেওয়াল ভেদ করে আকাশ আসবে কী করে!
তুমি চুপি চুপি বললে, ডুব দে আরও ডুব দে।
দেখবি মস্ত একটা আকাশ বিছানো সারা
মন জুড়ে।
সময় পেলেই তার সাথেই ভাব ভালোবাসা করিস, বন্ধু পাতাস।