পুরো পরিবারটাকে গত কয়েকদিন ধরে খিদে সহ্য করতে হচ্ছে। পুরো পরিবারটাকে গত কয়েকদিন ধরে উদ্বেগে দিন কাটাতে হচ্ছে। পরিবারের ছোটোরা সকলেই পরিবারের পিতাকে মাঝে মাঝেই প্রশ্ন করছে, খাবার কখন আসবে। পরিবারের কর্তাটিকে গৃহকর্ত্রী মাঝে মাঝেই প্রশ্ন করছে শিশুরা খেতে চাইলে সে কী খেতে দেবে। এমনিতেই সমুদ্রের ধারের একটা জেলে গ্রামে তাদের ঘর। মাঝে মাঝে জলের তান্ডবে তারা ভিটে মাটি চ্যুত হয়।
সেদিন পরিবারের কর্তাটি মাছ ধরতে গিয়ে শেষ সম্বল জালটা বেচে দিল অন্য এক মৎস্য ব্যবসায়ীকে। তার বদলে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চেয়ে নিল মাছটাকে। ব্যবসায়ীটি জেলেটির মুখে পরিবারের করুণ কাহিনী শুনে অবাক হয়ে বলল, ‘ এই মাছ তুমি কি জন্য কিনছো পরিবারের প্রাণ রক্ষার্থে?’ জেলেটি যাবার উদ্দ্যোগ করতে করতে বলল, ‘ না, শিশুদের কাছে নিজের মান রক্ষার্থে।’
কর্তার হাতে মাছ দেখে কর্ত্রী পাশের বাড়ি থেকে তেল ও চাল ধার করে আনলো লুকিয়ে। তেল মশলা সহযোগে অত্যন্ত উপাদেয় রেসিপিতে মাছটা রাম্না করলো বাড়ির বড় মেয়ে। রাত হলে কর্তা সমেত বাড়ির সকলে খাবার টেবিলে বসলো রাতের খাবার ভক্ষণে।
খাবার খেয়ে নিজের বিছানায় ফিরে কর্তাটি অপেক্ষা করছিল মৃত্যুর যন্ত্রণার অনুভব পেতে। খানিকক্ষণ অপেক্ষার পর প্রথমে স্ত্রী পরে ছেলে মেয়েদের জিজ্ঞেস করল কোনো যন্ত্রণা অনুভূত হচ্ছে কিনা। সারারাত এইভাবে যন্ত্রণা আসার জন্য অপেক্ষা করতে করতে কর্তাটি সকলকে একসময় বলেই ফেলল, ‘আসলে মাছটা ছিল অত্যন্ত বিষাক্ত ব্লো ফিশ।’
কথাটা শোনা মাত্রই প্রত্যেকে ভয়ার্ত চিৎকার করল। আর অপেক্ষা করতে লাগল মৃত্যুর জন্য।
কিন্তু পরেরদিন সকালে পরিবারের সকলেই ভোর দেখলো, কারণ মাছটা দীর্ঘক্ষণ ধরে উচ্চতাপে রান্না হওয়ায় তার বিষের ক্ষমতা নষ্ট হয়ে গেছিল বোধহয় অথবা মাছটি ব্লো ফিস ছিল না। সেদিন থেকে গোটা পরিবার আবার অপেক্ষা করতে লাগল ক্ষুধার জ্বালা নিবারণের জন্য।