গুচ্ছকবিতা -তে মান্টি অধিকারী দত্ত

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক হওয়ার পর ভাষাতত্ত্ব নিয়ে স্নাতকোত্তর এবং পরবর্তী কালে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর। একসময় বিভিন্ন সমাজ কল্যাণমূলক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। পুনরায় সমাজের জন্য কিছু করতে চান এবং লেখালেখিতে সাধারণ মানুষের কথা বলতে চান।

১। শহর

এ শহর বৃষ্টি বাতাসে
মাটির সোঁদা গন্ধ মাখে না,মৃত্যু লোকানো বুকে খাঁচে
প্রজাপতিরা আর আসে না,এখন  আত্মার গায়ে
মাংসের পচা গন্ধকালসিটে নিকটিনে
মাতলা নদীর মাতাল ছন্দ ,এ শহর বিষন্নতার বাঁকে
বেদনার সুর বাঁধে না,এ শহরে পলাশের যান্ত্রিক সুখে
বসন্তের গন্ধ আসে না।

২। উদ্বর্তন 

অর্ধমৃত দেহটা কাঁধে নিয়ে চলছি,
চারিদিকে শুনছি পোড়া দেহের  মৃত সংলাপ

 

শূন্য সময়ে শূন্যতা বাড়ে গেলে
কোনটাকে পূণ্য বলবে  আর কোনটা পাপ!

পান্তার জিভে মাংসের লোভ,
কম্পনে ভেসে আসে প্রতিবাদ

পরিবর্তন,
সে তো নিছক ছুঁতো,
মৃত্যু লিখতে লিখতে
বুকে জুড়ে জমে যায়
সরীসৃপী উত্তাপ।

 

৩। ফিরে এসো বাক্য

শরীর বাঁকে বাঁকে বিষাদ বিচ্যুতি
তবু কিছুটা আলো এখনও নিভতে বাকি,
মুখোমুখি পিঠ ,দূরত্বে আলোকবর্ষ
উপড়ে গেছে মূল, নীলাভ নীল স্পর্শ
এসো আবারও কাছাকাছি আসি
রক্তকরবীর মধু খেয়ে
প্রতিসম্যের স্তনে ,
ক্লান্তি নিবার অমরত্বের
নিঃশ্বাস পুঁতে রাখি,
অনেক তো হলো,শ্লেষে  শেষে  ব্যাজস্তুতি
আবারও এসো অপরিসীম তৃষাতুর বাক্য ,
তোমায় নেশাতুর ব্যঞ্জনায় ক্ষুধার্ত হয়ে থাকি  ।

৪। ব্যর্থতা 

সে টেলিফোনের কম্পনে
সমুদ্রের ছন্দ ছিল
যে কম্পন আজ বাতাসে ভাসে না,
সে রাতের গায়ে
কস্তুরীর গন্ধ ছিলো
যে রাতের জ্বর আজও ছাড়ে না,
সহস্র মৃত্যুর জঠর থেকে
জহর মাখিয়ে নিই জন্মান্তরে,
শুধু জন্ম জন্মান্তরে
তোমার অমরত্বের স্বাদ মেটে না…

৫। চাহিদা

কিছু জন্ম ইতিহাস ভুলে যায়
পুনরায় জন্মের তাগিদে;কিছু মৃত্যু ঢাকা পড়ে যায়
আচমকা রোদ্দুরে;ক্ষীণ অস্তিত্ব ছুটে ছুটে
যায় ক্ষণিকের স্বর্গে ,প্রতিটা জন্ম কুরে কুরে খায়
গহীন থেকে গর্ভে ।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।