মার্গে অনন্য সম্মান খুশী সরকার (সর্বোত্তম)

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার
সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা পর্ব – ১১৭
বিষয় – ভাষা দিবস
মাতৃভাষার মর্যাদায়
যা-কিছু ওই মনের ভাব সব প্রকাশ হয় ভাষায়,
ভাষা ছাড়া মানুষ যে ভাই বাকশক্তি তার হারায়।
মনন চিন্তন সমাজ শিল্প সংস্কৃতি সব দিকে,
ভাষা দিয়েই বোঝা যায় আসল সত্তাটিকে।
বাংলা বড় শ্রুতি মধুর আমার মাতৃভাষা,
মায়ের মুখের বুলি তাই তো মমতায় সে মাখা।
সত্তায় আমার জড়িয়ে সে মায়ের নাড়ির মত,
প্রকাশ করি আবেগ উচ্ছ্বাস হাসি কান্না যত।
বাংলা আমার নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস হৃদস্পন্দন সবই,
মাতৃভাষায় সুখের দুখের আঁকি যত ছবি।
বাংলা ভাষায় কথা বলি বাঙালি তাই আমি,
মায়ের ভাষা বলেই বাংলা আমার কাছে দামি।
বাংলা আমার রক্তে মিশে শরীর সুস্থ রাখে,
ক্লোরোফিলে পাতা যেমন সবুজ হয়ে থাকে।
মাছ যেমন ওই খাবি খায় জল ছাড়া পলে পলে,
বাংলা ছাড়া মনের ভাবটাও প্রকাশ পায় না ফলে।
বাংলা আমার বুকের ভেতর নিবিড় একাত্মতায়,
মনের কথা মনের মতো বলি সহজে তাই।
প্রাণের দোসর বাংলাতে তাই সম্পদ আছে ভরা,
বঙ্কিম শরৎ রবি মধু সবার লেখায় গড়া।
বাংলা ভাষার মিঠি গুণে হৃদয় শীতল করি,
পরশমণির জাদুর ছোঁয়ায় আনন্দে মন ভরি।
এই ভাষাতেই গান গায় মাঝি ভাটিয়ালি সুরে,
বাংলায় শুনে রবীন্দ্র গান শান্তি হৃদয় জুড়ে।
এই ভাষায় ভাই কাড়তে এলো পাক বাহিনীর বুলেট,
বাংলাভাষী যুবক ভাইগণ করলো না মাথা হেট।
উনিশশো বাহান্নের সেই একুশে ফেব্রুয়ারি,
রক্তাক্ত সেই ঢাকা শহর আন্দোলন ভাই ভারি।
মাতৃভাষার মান বাঁচাতে বক্ষ দিল পেতে,
বরকত জব্বার রফিক সালাম মর্যাদাতে মেতে।
শহীদ হলো ভাইরা আমার বুকের রক্ত ঢেলে,
পাক বাহিনী পালাল ওই জয়ের গর্ব ফেলে।
ভাইয়ের রক্তে কেনা ভাষা এলো প্রাণে ফিরে,
‘ভাষা দিবস’ সেই দিনটি তাই প্রাণের আবেগ ঘিরে।
প্রাণের মূল্যে কেনা বাংলা বিপন্নতার ত্রাসে,
অবজ্ঞা আর উপেক্ষার ওই নর্দমাতে ভাসে।
বাংলাভাষী বাঙালি ভাই এসো শপথ করি,
বাংলা ভাষার মান বাঁচাতে মারি কিংবা মরি।
যতই কঠিন হোক না লড়াই করব প্রাণের পণে,
নয়ন থেকে মণি গেলে অন্ধ যে ভাই ক্ষণে।