• Uncategorized
  • 0

|| অণুগল্প ১-বৈশাখে || বিশেষ সংখ্যায় কুণাল রায়

ধর্মরাজের স্বর্গ আরোহন

মহাকাব্যের অন্তিম অধ্যায়। মহাপ্রস্থানের পথে পাঞ্চালি সহ পঞ্চপাণ্ডব। পাণ্ডবরা হস্তিনাপুরে তিন দশকেরও বেশী সময় ধরে শাসন করেছেন। পরিশেষে অর্জুন পুত্র অভিমন্যু সুত পরিক্ষেতের হাতে রাজ্যভার দিয়ে, বেড়িয়ে পড়েন স্বর্গের উদ্দেশ্যে।
কিন্তু পথে একের পর এক ইন্দ্রপতন ঘটতে থাকে। প্রথমে দ্রৌপদী। কৃষ্ণা বরাবরই অর্জুনকে অধিক প্রেম করতেন বাকি পাণ্ডবদের থেকে। কুরুক্ষেত্রের পটভূমিও ছিল পাঞ্চলীর উন্মুক্ত কেশরাশি। অসীম ধ্বংসের প্রাণবিন্দু হলেন এই দ্রৌপদী। তাই স্বর্গ দর্শন থেকে বঞ্চিত থাকলেন। এর পর সহদেব। মূলত জ্ঞানের এক অপরিসীম দর্পই সহদেবের মৃত্যুর কারণ হয়েছিল। রূপ, রস, গন্ধ ও স্পর্শের এক অনন্য মিশ্রণ ছিলেন নকুল। রূপ ও সৌন্দর্যের অহংকারী নকুলকে যাত্রাকালীনই প্রাণাহুতি দিতে হয়। অর্জুনের মিথ্যে অহংকার যে তিনি পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ধনুর্ধর ডেকে আনে তাঁর “অনিবার্য” মৃত্যুকে। অন্তিমে ভীম। কাম ও বাসনার উপাসক ভীমকেও মৃত্যু অতি সহজেই গ্রাস করেছিল সেদিন।
এর পর যুধিষ্ঠির একমাত্র সঙ্গী হন একটি কুকুর। ধর্মরাজের প্রতীক উনি। দেবরাজ তাঁর স্বর্ণরথ নিয়ে উপস্হিত । কিন্তু যুধিষ্ঠির ওই কুকুরটি ছাড়া যেতে অস্বীকার করেন। কিন্তু স্বর্গে পৌঁছে তিনি কৌরবদের ছাড়া কাউকে দেখতে পেলেন না! তাঁর স্ত্রী ও বাকি ভ্রাতাদের দর্শন পেলেন এক নরককুণ্ডে। ধর্মরাজের এই কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর, সকলেই স্বর্গে ফিরে গেলেন। তাই বলাবাহুল্য যে কর্মের ফল সকলকেই পেতে হয়। একটি সামান্য কীটও পরিত্রাণ পায় না এই কর্মচক্র থেকে। আমাদের কর্মই রচনা করে আমাদের ললাটলিপি!
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।