দেবাসুর সংগ্রাম এক অনন্ত তাৎপর্য বহন করে, এ কথা কোনোভাবেই অস্বীকার করা যায় না। এবং সেই দেবাসুর সংগ্রামের এক প্রকার নিষ্পত্তি আনতে, ত্রিদেব সমুদ্র মন্থনের পথ নির্বাচিত করেন। তবে শর্ত একটাই: মন্থনের পশ্চাতে যা যা প্রাপ্ত হবে, সবকিছু দেবলোক ও অসুরলোকের মধ্যে সমান রূপে বিভাজিত হবে।
প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। বাসুকি নাগকে পাশ রূপে ব্যবহার করা হয়। স্বয়ং নারায়ণ তাঁর কচ্ছপের রূপ ধারণ করে এক মজবুত ভিত্তি প্রদান করলেন। সর্পের লেজের দিকটা দেবতারা নিলেন এবং শিরের দিকটা দিতি পুত্রেরা! মন্থনের শুভ সূচনা হল। একে একে নানাবিদ রত্ন ও ঐশ্বর্য প্রাপ্ত করলেন তাঁরা। পশ্চাতে দেবী কমলা সহ ঐরাবত এবং চন্দ্রমাও প্রকাশ্যে এলেন। আনন্দে আত্মহারা দেবাসুর। কিন্তু এর পরেই ঘটল এক বিপর্যয়! হলাহল বিষ নির্গত হয়। আকাশে বাতাসে তখন এক চরম বিষক্রিয়া। সৃষ্টি এক প্রকার প্রলয়ের মুখে! কিন্ত কে এই চরম সংকট থেকে সকলকে উদ্ধার করবে! চিরকালের মতই শূলপানি শিবশম্ভু সমর ক্ষেত্রে আবির্ভূত হলেন। পান করলেন সেই হলাহল। কন্ঠ নীলাভা ধারণ করল। নাম হল নীলকন্ঠ। কিন্তু সেই বিরল বিষের তেজ সহ্য করতে না পেরে মহাদেব সংজ্ঞা হারালেন!
আরেক সংকট উপস্থিত, নিশ্চিতরূপে! কিন্তু স্বয়ং শিবানী থাকতে কোন ক্ষতি যে কারো হতে পারে না! তাই স্বয়ং কল্যাণী নেমে এলেন। রচিত হল এক ইতিহাস। নটরাজ শিবকে রূপান্তরিত করলেন এক শিশুতে। আপন স্তন পান করালেন, যার স্বাদ অমৃত্সম! মহেশ্বরের চেতনা ফিরল। সৃষ্টি তার ভারসাম্য ফিরে পেল। যখনই সংকট উপস্হিত হয়েছে,তখনই শিব ও শক্তি নেমে এসেছে সেই সংকট মোচন করতে। এক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। যুগে যুগে অমর হয়ে থাকবে তাঁদের কাহিনী। অনুপ্রাণিত করবে এই মানবজাতিকে। উদ্বুদ্ধ করুক এই মানবচেতনাকে, এই একমাত্র অভিলাষ!!