আমার লেখায় বারবার করে জীবন ফিরে আসে। কারণ একটাই! আমাদের পার্থিব যা কিছু, সবটাই জড়িয়ে আছে এই জীবনের সাথে এবং জীবনের মূল্যবোধের সাথে। জীবনের এই শাখা প্রশাখা যেমন ভাবে প্রসারিত হবে,তাঁর মূল্যবোধগুলোও সেবা বেই তাঁর দিশা পাবে। তবে এটি একটি বিশ্বাস মাত্র, বাস্তবে তা কতটা প্রয়োগ মূলক, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে!
শৈশব থেকে আমাদের শেখানো হয় সব সময় সত্য কথা বলতে, সঠিক পথে চলতে। কিন্তু এই শিক্ষা আমাদের কর্ণে প্রবেশ করলেও, মননে ছাপ ফেলতে দেরী করে। জীবনের পথে চলতে চলতে, না না ঘাত প্রতিঘাতে ক্ষত বিক্ষত হয়। না না অপমান ও কটূক্তিতে এই হৃদয় বিদীর্ণ হয়ে যায়। তবুও সততার পথ থেকে সরে দাঁড়াতে অক্ষম আমরা।এখানেই আমাদের দুর্বলতা প্রকাশ পায় এবং মানুষ আমাদের” taken for granted” করে নেয়। এটি কোন প্রহসন নয়, এক নির্ভেজাল সত্য। এই ভাবে চলতে চলতে একটি সময় আসে যখন এই হৃদয় এক প্রাচীরে রূপান্তরিত হয়। দীর্ঘদিন ধরে নিয়ে সততার জন্য যে লড়াই, তা স্মিত হয়ে আসে বোধ হয়। এক হতাশা গ্রাস করে। সত্য তখন মিথ্যের আবরণে বন্দি। কিন্তু সব থেকে বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে: আমাদের চারিত্রিক গঠন অনুমতি দেয়া না ভিন্ন পথ অবলম্বন করতে। বারংবার মনে করায় স্বামীজীর সেই অমূল্য বাণী: “সত্যের জন্য সবকিছু ত্যাগ করা যায়। কিন্তু কোন কিছুর জন্য সত্যকে ত্যাগ করা যায় না”।
বর্তমান সময় আমাদের সততার পথ থেকে সরিয়ে আনতে চাই। সাফল্যের জন্য চাই ছলনা, কপটতা- শিক্ষার এই স্রোতই ভেসে আসে আমাদের দিকে। কিন্তু আমরা অনেক ক্ষেত্রেই অবগত নই আমাদের কর্মের এবং তার ফলের। ইতিহাস সাক্ষী অসততার ভয়ঙ্কর ফলাফলের। তিলে তিলে মৃত্যু। এক যন্ত্রণা। সহজ মৃত্যু নয়। তাই সততার মূল্য লুকিয়ে আছে আমাদের অন্তরে, চেতনায়। রাস্তা ভাগ হয়ে গেছে দুই ভাগে। চয়ন আমাদের হাতে, যা আগামীদিনে পৌঁছে দেবে আমাদের গন্তব্যে!!
রবার্ট ফ্রস্টের সেই পংক্তি গুলো আজও ভেসে আসে:
“Two roads diverged in a wood,
and I –
I took the one less traveled by
And that has made all the difference”