• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে জয়িতা ভট্টাচার্য (পর্ব – ১২)

অন্তর্ধান

মোহিনীমোহন মার্ডার কেস নিয়ে ক্রমে জলঘোলা হচ্ছে। ছোটো বউ রেবতীকে ধর্ষণ করা হয়েছে নির্মমভাবে। মোহিনীমোহনের বাড়িতে যখন লাশগুলো উদ্ধার হয় তখন সেখানে ছিলো না রেবতীর দেহ। তার বাপের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছিল সে সেখানে পৌঁছয়নি যদিও খুনের দিন সকালেই সে রওনা হয়ে যায় নব নিযুক্ত চালক সমীরের সঙ্গে। চারদিন পর জাতীয় সরকার থেকে নয় কিলোমিটার দূরে একটি ঝোপের মধ্যে পাওয়া গেল তার পচাগলা লাশ।চালক গায়েব। পুলিশ তন্ন তন্ন করে খুঁজেও পায়নি সমীরের খোঁজ।
দেবলীনা ভাবছে খুব স্বাভাবিক যে সমীর বলে কেউ নেই।তাহলে আসল নাম কী। কোথায় থাকে।কার বা কাদের চক্রান্ত। ইতিমধ্যে আজিজের রিপোর্ট চাঞ্চল্যকর। নেকবর শেখ যে হঠাৎ জামিনে মুক্ত তার নাম অভিজিৎ দাশ। সে বাড়ি ফিরে আসে দিন সাতেকের জন্য। অতীন্দ্র , মোহিনীমোহনের ছোটো শ্যালক এই সময়ের মধ্যেই খুন হয়। বাংলাদেশ পুলিশের সাহায্য চাওয়া হয়েছে এই ব্যাপারে। কিন্তু দেবলীনার মন বলছে অভিজিৎ ই কি সমীর? সে ক্ষেত্রে সে এ পারেই আছে।হয়ত কলকাতার জনসমুদ্রে হারিয়ে।কিন্তু প্রশ্ন হলো সে কোন দলের আশ্রিত বর্তমানে।
যদিও প্রাক নির্বাচনী কেনা বেচার হাটে শাসক দল ও নতুন ধর্মীয় দলটি ক্রিয়াশীল আসল কলকাঠি নাড়ছে প্রাক্তন দলের নেতারাই।
— রজত, নেকবরের হদিশ জরুরি ওর ডি এন এ রিপোর্ট চাই। সব কিছুর আগে
অবাক হয় কিছুটা রজত। সামলে নেয়।
তুমি কি বলছ বাচ্চার ডি এন এ র সঙ্গে ম্যাচ করতে পারে? কিন্তু , নেকবর ত জেলে ছিল।
— অসম্ভব বলে কিছু নেই রজত।
আসাদুলের কথা ভুলো না। পুরোনো আক্রোশ ভোলেনি সে। চারটে খুন করেছে সে। অথচ এখনো ফেরার।বহাল তবিয়তে দিনাজপুরে দেখা গেছে তাকে।
কাঁসাই নদীর চরে। এখনো সন্ধ্যা নামে এখনো অঝোর বৃষ্টি এসে প্লাবন ডাকে।তারাহীন এইসব রাতে আজও অন্ধকারে প্রেতের মত ঘুরে বেলায় কুন্তিবালা। খোলা চুলে জট। কৃষ্ণবর্ণা মস্তিষ্ক খোয়ানো বুড়িটা।
ও শান্তার মা। দেবলীনার স্কুলের সাথী শান্তা। হরেকৃষ্ণ র দেনা ছিল বেশি নয় হাজার দশেক।বেশি।অনেকটাই বেশি এই দরিদ্র পরিবারের কাছে। রাতে এসেছিল চারজন। টাকার তাগাদা। বারবার। সেই রাতে ওরা নদীর ধারে সাইকেলটা রেখেছিল। এসেছিল টাকা নিতে না পেয়ে ওরা নিয়ে গেল শান্তাকে। আর তারপর শুধু রক্তাক্ত যোনি আর কাটাছেঁড়া একটা বডি হয়ে গেল শান্তা।
এখানেও এখন সন্ধ্যা। দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে আই পি এস দেবলীনা। মেয়ে এখনও ত মেয়েই।বড় সহজলভ্য তাকে দুমড়ে মুচড়ে নষ্ট করে ফেলা।
দু ফোঁটা জল কোথা থেকে যেন উড়ে আসে চোখে।
–“স্যর ” সাব ইন্সপেক্টর পারমিতা অবাক চোখে তাকিয়ে। দরজা দিয়ে ঢুকছে রজত।

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।