আমি আরো একটু নিচু হই।
নিচু হতে হতে ইঁদুরের মতো দেখতে ছোট হই। একদিন সকালে আমি সত্যি সত্যি ইঁদুর হয়ে যাই। তারপর এই ঘর কেটে ঐ ঘরে গিয়ে বাসা বাধি একদিন ঐ ঘরের দামি দামি জিনিস আমার ধারালো দাত দিয়ে কেটে কুচিকুচি করে সাথে কিছু লুট করে চলে আসি।
আমি জানি কার ঘরে কি আছে তাই ইচ্ছে হলেই প্রবেশ করি যেমন খুশি তেমন করে।
মাঝেমাঝে অনাথ অসাহায়ের ঘরেও ঢুকে যাই, কারণ আমার কোন মায়া নাই যা পাই তা কুটকুট করে কাটি সাথে অবশিষ্ট যেটুকু থাকে তা লুটি, তারপর মনের সুখে হাসতে হাসতে বেড়িয়ে আসি। অসহায়ের শেষ সম্বল টুকু হারিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বিলাপ করতে থাকে আমার ডাক নাম ধরে আমি তা শোনে আবার হাসি, অট্ট হাসি, গাধার মতো করে হাসি। আমার কিন্তু পরিবার আছে ওদের নিয়ে আমি মস্ত বড় অট্টালিকায় থাকি, শীত গরম ওদের ছুঁতে পারেনা তাই আমি ভীষণ খুশি। আমার দাঁতে বিষ আছে প্রয়োজনে সাপের মতো দংশন করি, বিষের যন্ত্রণায় মাটিতে পড়ে ছটফট করে মরে যায় অনেকে তার ক’দিন পর আমি নিশ্চিন্তে আবার ধারালো দাঁত দিয়ে কাটি, ধবংস করি অনেক পরিবার, লুট করি রাষ্ট্রের সম্পদ। আমাকে কেউ চিনতে পারে না শুধু জানে আমি ইঁদুর আমার দাঁত দিয়ে শুধু রাতের অন্ধকারে বা সময় বিশেষ দিনের আলোতে ও কাটি আর লুট করি।
আমি যে শুধু কাটি আর লুট করি তা কিন্তু নয় আমি আমার সাথীদের নিয়ে চাল গম পছন্দসই সম্পদ লুট করে, করি বাঁটাবাঁটি। ধানের ক্ষেতে, গমের ক্ষেতে দলবল নিয়ে নামি ইচ্ছেমত সব লুট করে গর্তে লুকিয়ে রাখি। আমি কিন্তু খুবি চালাক, বিড়াল মামার সাথে সখ্যতা আমার তাঁকে মাঝেমাঝে মাছ দুধ ডিম দিয়ে করি তাঁর সাথে মিষ্টি সম্পর্কের মাখামাখি।
যাতে আমার প্রবেশ দ্বারে বাধা হয়ে সে না দাঁড়ায় না করে বাড়াবাড়ি।
একবার এক বিড়াল মামা খায়না মাছ খায়না দুধ ডিম, কি করি, কি করি, চোখে ক্ষুধা মনে লোভ, গেলাম শিয়াল পন্ডিতের কাছে বললাম সব খুলে শেয়াল রেগে গিয়ে বললো একি কথা বিড়াল খায়না মাছ খায়না দুধ কেমন বিড়াল দেখবো তাঁকে চল এবার। আমি বললাম না শেয়াল পন্ডিত যেতে হবে না শুধু বিড়ালটাকে বলেন আমার পথ না যেন আটকায়। তবে তাই হোক, বলে দিচ্ছি শুধু মনে রেখো ইঁদুর আমার ভাগটা কিন্তু আমি ঠিকমতোই চাই, না হলে তোমার বিষদাঁত দুটো তোলে নিবো বলে দিলাম ভাই।
এভাবে কাটতে কাটতে লুটতে লুটতে একদিন বেখেয়ালে বাঘ মামার ঘরে গিয়ে যেই কাটা লুটা শুরু করবো ঠিক তখনি বাঘ মামা পেছন থেকে ডেকে বলে কিরে ইঁদুর বেটা আমার ঘরে ও এলি বিচার বুদ্ধি সব খেলি এবার যাবি কই ছাড়া পাবি না তুই।
সেই থেকে আমি ইঁদুর হয়েই বাঘ মামার তৈরি খাঁচায় বন্ধী, আমার মতো নষ্ট ইঁদুরদের বাঘ মামারা এভাবেই যদি ধরে ধরে শাস্তি দেয় তাহলে নতুন নতুন ইঁদুরের জন্ম হবে না সমাজে, সুখের হবে চারিপাশ।