সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে ইন্দ্রাণী ঘোষ (পর্ব – ৩০)

আরশি কথা

ঝোরাদের শুট্যিং টিমের বাস যখন বাগডোগরা এয়ারপোর্ট থেকে সিকিমের দিকে যেতে শুরু করল আকাশে মেঘ করে আছে. মাঝে মাঝে দু, এক পশলা বৃষ্টি হচ্ছে. সকলের কপালেই চিন্তার ভাজ. বৃষ্টি শুট্যিং পন্ড করলেই হয়েছে. এতজনের এতদিনের পরিশ্রম. মেই লিং আর ড: মঞ্জরী বসু পাশাপাশি বসেছেন. প্রোডাকশন টিমের ছেলেরা সব ইকুপমেন্ট নিয়ে একদম পেছনে বসেছে. ঝোরা মাঝামাঝি সিটে. অপূর্ব একদম সামনের সিটে ড্রাইভারের পাশে, আনমনা হয়ে জানলা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে .
ওরা চলেছে এক নি:ঝুম পাহাড়িয়া জনপদ রিং চেং পং. এক ছোট্ট গ্রাম. গ্রামের মাঝে এক ছোট্ট মনাষ্ট্রী. মনাষ্ট্রীর গা লাগোয়া টিবেটিয়ান স্কুল অফ এন্থ্রপোলজির গেষ্ট হাউস. ঝোরাদের টিম সেখানেই উঠবে. এই মনাষ্ট্রীর ভিতরেই আছে বেশ কিছু দূষ্প্রাপ্য স্ক্রোল. স্ক্রোলের গল্প উদ্ধারের চেষ্টা করবে অপূর্ব. মঞ্জরী শুধুই বেড়াবেন কোন কাজে জড়াবেন না, বলেই দিয়েছেন. মনাষ্ট্রীর লামাদের কাছে তথাগতর কথাও খানিক শোনা যাবে.
পাহাড়ের পথ বৃষ্টিতে পিচ্ছিল. পাহাড়ে বৃষ্টি মানেই আশেপাশের দৃশ্যাবলী লেপেপুছে একাকার. শুধু কুয়াশার বিস্তির্ণ চাদরে ঢাকা পড়ে রয়েছে উপত্যাকা. ঝোরাদের টিম রিং চেং পং পৌছতেই টিবেটিয়ান স্কুল অফ এন্থ্রপোলজির চৌকিদার এসে জিনিষপত্র নিয়ে গেল ঝোরাদের. মালপত্রর সাথে চৌকিদারের পেছন পেছন ঝোরাদের টিম প্রায় দাত কপাটি লাগতে লাগতে হাড়হিম করা ঠান্ডায় ঘরে এসে ঢুকল. ছটা ঘরে ভাগ করে সকলে থাকবে. একেকটা ঘরে দুজন করে. শুধু একটি সিঙ্গল রুম. সকলেই যে যার রুমমেট ঠিক করে নিয়েছে. ড: মঞ্জরী বসু ও মেই লিং একসাথে একটি ডবল বেডরুমে ঢুকে পড়েছেন.
ঝোরার থাকার জন্য সিঙ্গল রুমে বরাদ্দ হল. মনে মনে খুশি হল ঝোরা, কাজের পর একা একা থাকতে পারবে. ঘরটি ছিমছাম. অনেক পুরোন বাড়ী ফায়ার প্লেসে আগুন জ্বলছে. আসবাবপত্র সাবেকি. বড় খাট, লেখার টেবিল. ঘর লাগোয়া বাথরুম. বাথরুমের সামনে খানিকটা জায়গা সেখানে বেলজিয়াম গ্লাসের বিশাল আরশী.

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।