যার সম্পর্কে আজ দু’এক কথা লিখতে বসেছি সেই সৌরভ ছিল আমার থেকে বয়সে অনেকটাই ছোটো। বয়স আমার ভাবনায় কোনোদিন মাথা চাড়া দেয় নি আজও দেয় না। তবুও আজ শুরুতেই একথা বললাম একটাই কারণে, এতো ছোটো বয়সে তাকে চলে যেতে হলো! মানুষের যাওয়ার কোনো বয়েস নেই —— আমি সব জানি কিন্তু তবুও তো মানুষের মন, কিছুতেই এই ভাবনা ছেড়ে বেরোতে পারি না।
সৌরভের সঙ্গে আমার পরিচয় শুধু নামেই। সে আমাকে হয়তো চিনতো। কিন্তু তার সঙ্গে আমার কোনোদিন কোনো কথা হয় নি। না ফোনে, না মুখোমুখি। আসলে আমি চিরকালই একটু চুপচাপ থাকতে ভালোবাসি। যারা আমাকে চেনে তারা জানে আমি হৈচৈ করার মানুষ নই। আমি একটু নিজের মনে দূরে থাকতেই ভালোবাসি। তাই হয়তো সৌরভের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ হয় নি। কিন্তু সে আমার ফেসবুকের বন্ধু ছিল। তাই তার কাজকর্ম সম্পর্কে আমি দূরে থেকেও জানতে পারতাম।
সত্যিই তার মতো সংগঠক আজকের দিনে পাওয়া মুশকিল। যেকোনো কাজেতেই সে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারতো। কে তার সঙ্গে আছে তার পরোয়া সে করতো না। এই তো কিছুদিন আগে কলকাতায় কয়েকদিন ধরে যে কবিতা উৎসব হলো তার মধ্যমণি তো সেই ছিল। অবশ্যই তার সঙ্গে আরও অনেকে ছিল কিন্তু তবুও আমার মনে হয় সৌরভ না থাকলে বোধহয় অত বড় একটা কাজ করা সম্ভব হতো না। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগেও সে কবি রণজিৎ দাশকে নিয়ে একটি অনুষ্ঠান করেছে। আসলে সে এইরকমই ছিল।
গতবছর লকডাউনের সময় সে নিয়মিতই ফেসবুকে লাইভে বিভিন্ন কবির কবিতা নিয়ে আসতো। আমি তার কয়েকটি শুনেছি। খুব ভালো লেগেছে। তার নিজের কবিতা লেখার হাতটিও বেশ ভালো ছিল। তাই তার মতো মানুষের এই অসময়ে চলে যাওয়া বড় যন্ত্রণার। কবিতাপ্রিয় মানুষ সৌরভকে মনে রাখবে।