আমি কী ঘুমিয়ে, নাকি জেগে আছি “
ঘুরতে ঘুরতে একটা নদীর পাশে দাঁড়িয়ে দেখছি
একটা পুরনো বটের ছায়া ঝুলে আছে
নদীর জলে আধখানা ভেসে আর আধখানা ডুবে!
তারপর, আরো কিছুদূর যেতে যেতে
যখন সন্ধ্যা নেমে এলো, দেখলাম কোত্থেকে
একটা কালো বিড়াল পিছু নিয়েছে আমার!
আমি একবার ওকে আমার পেছনে পেছনে
আসতে বারণ করলাম!
ও তখন আমাকে ভীষণ রকমের ভয়
দেখানোর চেষ্টা করলো নানারকমের
আধিভৌতিক উদ্ভট শব্দ করে,
তারপর একটা সময় হারিয়ে গেলো অন্ধকারে!
ওকে আর খুঁজেই পাওয়া গেলো না।
আমিও ধীরে ধীরে বাড়ির পথে পা বাড়ালাম
কিন্তু পথের কোনো শেষ খুঁজে পেলাম না
সেই কালো রঙের বিড়ালটার মতোই!
হাঁটছি তো হাঁটছিই!
তারপর! একটা সময় আড়মোড়া ভেঙে
দেখি আমার গলা শুকিয়ে আসছে খুব,
একটু জল পানের জন্য টেবিলে রাখা
গ্লাসটা হাত দিয়ে ধরতে গিয়ে
পুরো গ্লাসটা জলসহই নিচে পড়ে গেলো।
জল পান আর হলো না আমার !
সেই থেকে আমি শুধু জলসহ
পড়ে যাওয়া গ্লাসটা ধরেই বসে আছি,
বসে আছি, বসেই আছি!
অনন্তকাল যেনো থাকবো বসে এমন করেই।
আচ্ছা, আমি কী ঘুমিয়ে, নাকি জেগে আছি?
ভয় পেয়ে সেই কথাটাও ভুলে গেছি!
পাহাড়ি ঝর্ণার স্বচ্ছ জলের সামনে দাঁড়িয়ে
একদিন একটা উচ্ছল চঞ্চল খরস্রোতা
পাহাড়ি ঝর্ণার স্বচ্ছ জলের সামনে দাঁড়িয়ে
কী মনে করে জলের দিকে নিবিষ্ট চিত্তে
তাকিয়ে থাকতে থাকতে জলের ওপরে
নিজেরই প্রতিবিম্ব দেখে হঠাৎ
দুঃখ নদীর জলের তোড়ে বুক ভেসে যায়,
ডুবে যাই আপন সত্তার গভীরে!
মনে হলো এ কোন আমি কিংবা
এটাই কী আমি? এখানে এতো
ক্লেদ জমে আছে যে এটাকে দেখে
আমার নিজেরও ভীষণ কষ্ট হয়!
জীবনের এতোটা বছর পেরিয়ে এসে
দেখি এখানে কোনো আলো নেই,
সবকিছুই ভীষণ শূন্যতায় ঘেরা একটা
প্রাচীন পরিত্যক্ত কুপের মতোই !
এভাবে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মনে হলো,
তাহলে এই জীবনের কী কোনো মানে আছে?
এখনো তো তোমার সাথে
প্রেম জমাতে পারলাম না!
তাই যদি না হবে তাহলে
নিজেকে এমন জন্মান্ধ অমাবস্যার
মধ্যরাতের মতো মনে হলো কেনো?
তোমার সাথে প্রেম জমাতে পারলাম না বলে
এখন আমি দুঃখ নদীর জলে ভাসতে থাকি,
ভাসতে থাকি, ডুবতে ডুবতে ভাসি,
আবার ডুবতে ডুবতে ভাসি!
তবুও আশার আলো জ্বলতে থাকে
বাঁশঝাড়ে দেখা জোনাকির মতো,
একদিন ঠিকই তোমার সাথে
প্রেম জমে উঠবেই!
একদিন ঠিকই তোমার সাথে
প্রেম জমে উঠবেই।