• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে গৌর হরি মান্না (ভ্রমণ কাহিনী)

সাতকোশিয়ার সাতকাহন

(অন্তিম পর্ব)

দুপুরের মহানদীর চরাচর যেন থমকে রয়েছে, স্থির দৃষ্টিতে আমি চেয়ে রইলাম নদীর আলাপী প্রলাপের চাহনিতে। হয়তো ওই যৌবনা নারী বলতে চায় অনেক কিছু, কিন্তু শোনার মানুষ কোথায়। সাত পাঁচ চিন্তা করতে করতে নদীর চর ধরে হেঁটে উপস্থিত হলাম কটেজে। আজকের দুপুরের মেনু গরম ভাত, আলুভাজা,স্যালাড,ডাল,আড় মাছ ও চাটনি। বেশ তৃপ্তি করে খেয়ে কটেজের বাইরে চেয়ার নিয়ে বসে একটু বিশ্রাম ও অরণ্য নিয়ে আলোচনায় বসলাম। দেখতে দেখতে বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যার আগমন। ওদিকে গোধূলির রঙমেখে মহনদী যেন লাজুক যুবতীর মতো আপন মনে বহে চলেছে। সন্ধ্যা নামার পড় সাতকোশিয়ার চারিদিকের পরিবেশ যেন কোন এক মায়াবী ছোঁয়ায় মোহময় হয়ে উঠলো।
তার ওপর তাবুর ভেতর ও বাহিরের আলো গুলো আরো বেশি মোহময় করে তুলছে। রাতে জমাটি আড্ডা ও সঙ্গে ক্যাম্প ফায়ার যেন মনকে নিয়ে গেলো কোন এক অজানা জগতে। রাতে দেখি চাঁদের আলোর বিচ্ছুরণে মহানদীর বুকে যেন ফুটে উঠছে পূর্বঘাট পর্বতমালার অবয়ব। জ্যোৎস্নায় ভেসে যাচ্ছে অরণ্য, আর আমি প্রকৃতির এই রূপে বিভোর হয়ে নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে। অবশেষে রাতের খাবার খেয়ে তাবুতে রাত ঘুমের দেশে চলে যাওয়া। রাতের পূর্ণিমার চাঁদ, মহানদীর মায়াবী রূপ, সাতকোশিয়ার আর্তনাদ, রূপায় মোড়া মহানদীর চর, সবুজ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা পূর্বঘাট পর্বতমালা আর সব শেষে প্রকৃতির এই রূপ আপনাকে সাড়া জীবন স্মৃতি মেদুরতায় আচ্ছন্ন করে রাখবে। তাহলে আর দেরি কেন হাতে দিন চারেকের সময় নিয়ে বেড়িয়ে পড়ি সাতকোশিয়া অভয়ারণ্য।
প্রয়োজনীয় তথ্য :- হাওড়া থেকে সাতকোশিয়া যাবার সব চেয়ে ভালো ট্রেন হচ্ছে সম্বলপুর এক্সপ্রেস।
যা আপনাকে সোজা নিয়ে যাবে সাতকোশিয়া অভয়ারণ্যের কাছের স্টেশন অঙ্গুল। অবশ্য শুধু মাত্র শনিবারের জন্য এই সুযোগ পাওয়া যায়। এছাড়া রাতের জগন্নাথ এক্সপ্রেস, পুরী এক্সপ্রেস, করমন্ডল অথবা ধৌলি ধরে কটক ওখান থেকে গাড়ি নিয়ে তিন ঘন্টার পথ সাতকোশিয়া অভয়ারণ্য। সাতকোশিয়া থাকা অথবা ঘোরার যায়গা প্রধানত চারটে। টিকরপাড়া, ছোটকেই, পুরানকোট ও লবঙ্গী। গাড়ি সঙ্গে রাখা খুব জরুরি, কারণ ঘোরার একমাত্র ভরসা ওই গাড়িই। অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারী মাস হচ্ছে সিজিন টাইম। এই সময় সীমার বাইরে সাতকোশিয়া যাওয়া অর্থহীন। সাতকোশিয়ায় বনদপ্তরের থাকার যায়গা রয়েছে। বুকিং এর জন্য এদের ওয়েবসাইট http://www.satkosia org দেখা যেতে পারে। ফোনে যোগাযোগ করতে পারেন-08763102681
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।