অণুগল্পে দীপঙ্কর নায়েক (শ্রীদ্বৈপায়ন)

নেপোলিয়নের রণনীতি

বিনা শর্তে পুরো বোনাসটা বউ’র হাতে তুলে দিতে হবে। তাই নিয়ে চতুর্থ পানিপথের যুদ্ধ শেষে, শেষ ব্রহ্মাস্ত্র নিক্ষেপ করে নেপালবাবু অনশন নিয়ে বিছানায়। তাঁর পতিব্রতা স্ত্রী আর বেঈমান ব্যাটা নেপা চুক-চাক, সুপ-সাপ, চুস-চাষ সহ নানান শব্দে রাতের স্বাদহীন পাদযুক্ত সব খাবার সম্পূর্ণ আত্মসাৎ করে যথাক্রমে পড়াতে ও পড়তে বসেছে । তাঁর ছিয়াত্তর কেজির রোগা স্ত্রী বাজখাই হাইয়ের সাথে গরুর মতো ঢেকুর তুলছে। একঘেঁয়ে ঢেঁড়া গলায় নেপা ইতিহাস পড়ছে —
নেপোলিয়ন একই শত্রুর সঙ্গে বেশিবার লড়াই করতেন না, যদি’বা বাধ্য হয়ে করতে হতো, তখন তিনি রণকৌশল ভিন্ন রাখতেন। তিনি জানতেন এক শত্রুর সাথে বেশিবার একই স্টাইলে যুদ্ধ করলে সেই শত্রু তাঁর রণকৌশল বুঝে যাবে। সৈন্য-অর্থ ক্ষয় তো আছেই এর পরও পরবর্তীতে তাকে পরাস্ত করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

ব্রহ্মাস্ত্র কিভাবে ফেল হলো! এই নিয়ে ভাবতে ভাবতে অনিচ্ছা সত্ত্বেও শেষের কথাগুলো নেপাল বাবুর কানের ভিতর দিয়া মরমে ঠেকলো। একই সঙ্গে পেত্নীর শেষ বচনটা মনে পড়লো – তোমার সব কৌশল আমি জানি!
–তাহলে এই ব্যাপার!
নেপালবাবু ভার্চুয়াল নাক কান মুড়ে বলেন — হায় ভগবান, ইতিহাসটা কেনো ভালো করে পড়লাম না। তাহলে বীজ ভর্তি ট্যাঁংরার পরিবর্তে বউয়ের খেংরা শুনতে হতো না; খাসির হাসিটা এখন তার মুখে থাকতো। সামান্য ভুলে তাঁকে অন্তত মুরগি তো হতে হতো না।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।