নাট্য-নাটিকায় দেবাশীষ মণ্ডল (পর্ব – ২)

ভেক করোনা

২য় দৃশ্য (পানশালার পথ)

(গোলায় বোতল বেন্ধে বাউন্ডুলে গান করতে করতে আসে)
বাউন্ডুলে।( গান) জল,জল বুবু জল জল,অনেক জল আছে বুবু ,ঘোলা জল,স্বচ্ছ জল, নর্দমার জল আরো হরেক জল।জল,জল বুবু জল,জল আমার কাছে নাইকো বুবু মিষ্টি জল।আমার কাছে পাবে বুবু ল-ব-ন জল। (কাঁচা বাদাম গানের সুরে গানটি করবে)
(গান শেষে গোলার বোতল দেখিয়ে)

বাউন্ডুলে। বাববা !নোনা জলে করোনা হয়না!তাই বাবাকে বলে এই হোম মেড লবন জল গোলায় বেন্ধে ঘুরে বেড়াচ্ছি ।এ্যা হাসে দেখ! যেন হাস্যকৌতুক হচ্ছে এ গ্রামে। লে কলা আমি বাঙালি র বাইরে নাকি । বাঙালির হচ্ছে গাটে গাটে বুদ্ধি। তাই বুন !বুদ্ধির মুখসুদ্ধি করে এই পেলেন টা বার করলাম। মাথার ঘেলু কে ডেটুল সাবানে ধুয়ে,সানলাইট সার্ফ দিয়ে ধোবার মত আছাড়া মেরে,মেরে কচলায়ে,শেষে উজালার জল চার ফোঁটা দিয়ে, রোদে শুকিয়ে একেবারে হটহটে করে, তবে এ বুদ্ধিটে কাজে লাগায়ছি।আমি হলেম বুদ্ধির বৃহস্পতি।কি ভালো না?হেঃ-হেঃ-হেঃ-।না গো আমি না একা বাঁচব তার জন্য বানায়নি, তোমরাও বাঁচবে ।এই নাও সবাই কে ছিটা ফোঁটা দিচ্ছি,এই নাও।

(বোতলের মুখ খুলে ছিটাতে থাকে এমন সময় মাতাল মদের বোতল হাতে আসে।মাতালের গায়ে লবন জলের ছিটে পেয়ে যায়।মাতাল রেগে বলে)

মাতাল। এই কন হনুমান রে আমার গায়ে হিসু করিস।কন—(টলতে থাকে)।কি ভেবেছিস আমি মাতাল!আমি হলেম গিয়ে এ দ্যাশের খাদ্যমন্ত্রী।আজ আমি আছি বলে দ্যাশ চলছে।বেশি পেছন পাকামু করলে নেশা করা বন্ধ করি দিব রে হনুমান।কয় সামনে আয় কে এমন হিসু করিস সাহস থাকে ত সামনে—(হঠাৎ বাউন্ডুলে কে দেখে)
ওরে আমার চাঁদ বদন রে । হনুমান না রে এ রে আমার রাম রে।আয় কাছে আয়।তুর কাছেও বোতল,আমার কাছেও বোতল।মানে হিসসু,কিসসু না ।আয় বাপ বোতলে, বোতলে কলাকলি করি।আয়,আয়।

বাউন্ডুলে। এই মরেছে! এ তো দারুন মাতাল। আবার বলে কলাকলি করব।এই করোনা কালে আবার ঐ সব।

মাতাল। আয় আয় কাছে আয় বোতল যখন হাতে আছে কোন ভয় নাই।এ বোতলের জোরেই দেশ চালায়।কে কি বলে দেখি।আয়-

(সহসা ডাক্তার এসে বলে)

ডাঃ। আসবো, আসবো যতদিন বেঁচে আছি এ গ্রামের মানুষ গুলো কে বাঁচাতে আমি ছুটে আসবো।
আমি ডাক্তার মানুষের চিকিৎসা করা তো আমার কাজ।

মাতাল। কে রে হনুমান। আমি কি মরে গেছি যে তোমাকে ভাবতে হচ্ছে ।শুনো হে ডাক্তার আমি আর আমার এ মাল যতদিন আছে কাউকে লাগবে নাই।মানে সব কিছু এ বোতলে করবে।না কি রে ……

বাউন্ডুলে। বোতল, হ হ আমার বোতলেও ঔষূধ আছে করোনা মারার ঔষূধ।মানে লবন জল।

মাতাল। দুর, শা…..!না মানে লবন জলে কি করোনা মরে !এ বোতল, মানে এ এ মালে মরতে পারে।
মাতালের মতো কথা বললে কেউ বিশ্বাস করে কি!

ডাঃ।না লবন জলে মরে, না মদ খেলে করোনা মরে।একমাএ ঔষধের করোনা ।মানে ভ্যাকসিন নিলে করোনা এ্যাটাক কম করে।তাই সকলে ভ্যাকসীনের প্রত্যেকটি ডোজ নাও করোনা তাড়াও।

বাউন্ডুলে।কেনে লবন জলে মরে না নাকি!

মাতাল।দুর বোকা পাঁঠা লবন জলে যদি করোনা মরতো ত নুন জল গুলে ডুবোতাম আর উঠাতাম;উঠাতাম আর ডুবাতাম(নিজে যেন ডুবতে থাকে আর উঠতে থাকে)বুঝলি বোকা গরু।

বাউন্ডুলে।দেখ,দেখ আমাকে পাঁঠা বলছিস আমি রাগ করবো নাই,কিন্তু গরু বলবি নাই।না হলে তুকে একেবারে গরুর রচনা করে ছাড়ি দিব হ। পাঁঠা বললে বল আমার বাবাও ত আদর করে ওটোয় বলে।(আনন্দের সহিত)।

ডাঃ। ঠিক ই বলে তোরা ঐ পাঁঠায় বটিস ত। দু’জনেই একে বারে আস্ত পাঁঠা।
(চলে যায়)

বাউন্ডুলে।দেখলি ,দেখলি কেমন আমার নাম করে গেল ডাক্তারে।তাহলে বুঝ কেমন মানুষ আমি।এই লবন জলের গান টা মারে এ বারে একদম সেলিব্রেটি হয়ে যাব তখন তখন দেখবি যা হবে না।ওরে বাবারে!(শিহরনের কায়দা)। যা যা ঐ মদ রাখে এখন থেকে লবন জল নিয়ে ঘুর। যারে মদনা, আর চলেনা মদ,না।মানে মদ চলবেক নাই ।এই লবন জলেই সব যাবেক।পেট খারাপ বা করোনা।তাইতো বলি আমার কাছে নাই কো বুবু খারাপ জল আমার কাছে আছে বুবু ল-ব-ন জল।(গান করতে করতে চলে যায়)।

মাতাল।এ্যা।লবন জল।বলি লবন জলে নেশা হয় নেশা।হয়নারে বাউন্ডুলে হয়না। কিন্তু এই মালে মানে মদে নেশা হবেই হবে। সবাই বেইমানি করবে কিন্তু মদ না কোনদিন বেইমানি করেনারে শা—,,।দুর নেশাটায় চটকে গেল আর একটা পাউচ চাই পাউচ কুড়িটাকার পাউচ।
(ফ্রিজ)
ক্রমশ

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *