T3 শারদ সংখ্যা ২০২২ || তব অচিন্ত্য রূপ || বিশেষ সংখ্যায় দিশারী মুখোপাধ্যায়

মূর্তি জানে
সে তার শিল্পীকে খুব বোঝে
নাকের ডগা, হাতের তালু, স্তনের তৃষ্ণা
গড়ে ওঠে শিল্পীর মন ও মর্জি মাফিক
শাড়ির যতটা আড়ালেই থাক নাভি
লোহা দিয়েই তৈরি হয় ছেনি বাটালি
প্রয়োজন মত অল্পস্বল্প কাঠও ব্যবহার হয়
মানুষের অনেক আগে থেকে সে ইতিহাসকে পড়ছে
ইতিহাসের জন্যই, প্রকৃতপক্ষে, তার ঘুম
প্রথম ভেঙে ছিল
ঘুমের কথা উঠলে, শত কষ্ট হলেও
তার রাগ পড়ে আসে , দেখেছে
ঘুম বলে শিল্পীরও কখনো ছিল না কিছুই
তালা
ঝুলছে বলে প্রমাণ করা যায়
বাড়িটা একসময় তৈরি শুরু হয়েছিল
সাদাবকের পাশে ঝিল তখনো জানত না –
চিন্তা করতে সে তখনো শেখেনি
ক্যাডবেরিও বাজারে আসেনি বলে
পরিবর্তন কতটা নির্মম হয়
কিছুদিন মাছের কালিয়া, ভাপা ইলিশ হয়েছিল
ঘরে পাতা দই তার গন্ধ দিয়ে
রান্নাঘর সাজাতো
লোকে সময়কে নিয়ন্তা বলে
কিন্তু ব্যাপারটা ঠিক স্পষ্ট নয়
একটা সেগুন পাতার মত
এখন ও বাড়িতে আর চাও তৈরি হয় না
প্রতিশব্দে মধু
রাত্রে যে কামড়িয়েছে বুকে
নেংটিইঁদুরের বাচ্চার ধারালো তীক্ষ্ণ দাঁত নিয়ে
এখন উড়ে বেড়াচ্ছে
রামধনু কেটে তৈরি করা ডানা নিয়ে
আনন্দকে তার আপন স্বাদ বুঝাতে বুঝাতে
আহ্লাদে মধু হয়ে উঠছে
ভোঁতা গণ্ডার, মাতাল হাতি, ক্ষুধার্ত বাঘ
পাথর পাথর আর যত রাজ্যের পাথর
কষ্ট হয়েছে তবু চেয়েছি
রক্ত ঝরেছে, নখ দিয়ে ছিঁড়েছি ক্ষত
পুড়ে পুড়ে পুড়ে আগুন হয়েছি
রাত্রে যে কামড়েছে, দিনেও কামড়াক আমাকে
মাংসের হাড়ের মত চোয়ালের কষদাঁতে ফেলে
মাথা থেকে পা , অবিরত
মর্মার্থ
আমি কিছুতেই ঠিক করে উঠতে পারি না
সঠিক বাক্য আসলে কোনটা
আজ পর্যন্ত যত বাক্য লেখা হয়েছে পৃথিবীতে
তার মধ্যে
৯৯. ৯৯ শতাংশ ভাষায় যত বাক্য অবিরত
বুঝি একরকম। বুঝি সে সবের
কিছুই বুঝি না আমি
আর যে দুএকটা ভাষার সঙ্গে আমার
দেশতুতো, প্রদেশতুতো, জেলাতুতো কিংবা
গ্রাম/শহরতুতো সম্পর্ক আছে নাকের রোঁয়ার মত
তাদের প্রায় সব বাক্যই অল্প অল্প বুঝি বলে
বুঝতে পারি, – কিছুই বুঝি না
ইদানিং তাই আমি আর কোনো বাক্যই
কাউকে বুঝাতে চেয়ে লিখি না
পাথরের মত, ময়ূরের মত কিংবা মরুভূমি
প্রায় সমস্ত লোকই, অবশ্য অভিযোগ করে
শৈশবকাল থেকে আজ পর্যন্ত
যে ভাষায় কথা বলি
পোষা বেড়ালের সঙ্গে
আমি মরে গেলেই সেটা লুপ্ত হবে