কবিতায় পদ্মা-যমুনা তে দীপায়ন হোসেন

রাজকুমারী
রাজকুমারী তুমি কেমন আছে?
জানো এখনো আমি ক্ষণে অনুক্ষণে
তোমাকেই দেখতে পাই
নিরব রাত্রিতে গাঢ় ঘুমে যখন বিভোর
তখন অনুভব করি তোমার নরম হাতের ছোঁয়া
আচ্ছা এখনো ভোর স্নান সেরে খোপায় জবা ফুল পড়ো?
মনে আছে তোমার?
তোমার জন্য বিলের ঝিলে পদ্মফুল তুলতে
কি বিপদ-ই না হয়েছিলো
সেদিন কতটা কাঁদলে তুমি
তখন বোধহয় তুমি কলেজ পড়ুয়া
আর আমি ঠিক এক বছর আগে
আমার গ্রামের ঝোপে হিজল ফুলগুলো
এখন খুব বেশী মনে হয় না
দেখতে অচেনা ধূসর রঙের মনে হয়
তাছাড়া হাতের ঘড়িটাও বেশ পুরোনো হয়ে গেছে
সময়ের কাটাগুলো দেখতে কষ্ট হয়
রাজকুমারী তুমি কি এখনো কাউকে
ভূতের গল্প শোনাও অমাবস্যায়?
তুমি ভুলে যাওনি বোধহয়, অমাবস্যা রাতে
বাইরে যেতে ভীষণ ভয় পেতাম
তবে তোমার গল্প বলার ভঙ্গি আজও
ভুলে যাই নি আমি
আমাদের স্কুলে সূর্য মাষ্টার
তোমাকে লাবণ্য বলে ডাকতো
তার সমাধির উপর একটা কৃষ্ণচূড়া গাছে
আজও সেই গাছে ঘুঘু পাখিটা বসে থাকে
ও আচ্ছা, তোমাকে তো বলাই হয়নি
এই তো কদিন আগে
আষাঢ়ের বৃষ্টি রাতে ফজলি আমে দুধ খেয়েছিলে
তারপর সবাই ভেবেছিলো খুব ভালো মতো ঘুমাচ্ছে
কিন্তু! সেই ঘুম যে শেষ ঘুম হবে কেউ বুঝে নি
আমারও না আষাঢ় আসলে
ফজলি আমে দুধ মিশিয়ে খেতে মন চায় খুব
কিন্তু! শুধু তোমাকে দেখবো বলে
খেতে সাহস করি না
জানি না তুমি দূর-বহূদূরে এতদিন
কেমন আছো?
দেখতে কেমন হয়েছো?
তবে আমার মননে তুমি ঠিক
আগের মতোই রয়ে গেছো, রাজকুমারী
তুমি যখন হাসতে তোমার গালের
টোল পড়া গাল আর দেখতে পাই না
আচ্ছা, তোমার স্তনাগ্রের ছোট্ট আঁচড়ের দাগ আছে?
ইচ্ছে করে দেই নি, তবু পুড়েছি
আমার না মনে হলে এখনো কষ্ট লাগে
আর এতদিন পড়েও
তোমার পাঠানো ছবিগুলো
খুব যত্ন করে রেখে দিয়েছি
আর কদিন পরেই পূর্ণিমা
হিজল তলে থাকবো আমি
তুমি চলে এসো, শুধু একবার দেখবো
কতদিন দেখি না তুমি দেখতে কেমন এখন
হয়তো অনেকটাই বদলে গেছো