কবিতায় পদ্মা-যমুনা তে দীপায়ন হোসেন

কেমন আছোস দ্বীপ
কেমন আছোস দ্বীপ?
তোর কি জানতে ইচ্ছে হয় না, আমি কেমন আছি
তুই তো বলতিস পৃথিবী জুড়ে বহু মানুষের মাথায় ছাদ নেই
আবার যাদের আছে তারা বোঝে না এর মানে
আমি প্রশ্ন করছিলাম মনে আছে তোর?
ছাদহীন মানুষের মাথা, না মাথার উপর ছাদ
কিন্তু আমি এখন বুঝতে পারি ছাদ?
প্রায় পাঁচ বছর হলো গ্রাম-শহর মিলে বসবাস আমার
জানিস দ্বীপ এখন আর আগের মতো নেই রে
স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, রাস্তা-ঘাট, পার্ক, সভা-সমাবেশ, স্টেশন, স্টেশনে দাঁড়ানো নারী
দ্বীপ তোর কি মনে আছে একবার আমরা নারীর সন্ধিবিচ্ছেদ নিয়ে আলোচনা করেছিলাম
তুই বলেছিলি নারী নাকি বিশেষ্য পদ
কথাটা মন্দ বলিস নাই সেদিন
তবে জেনে রাখ নারী মানে বিশেষ্য বটে তবে বিশ্লেষণহীন
কেমন আছিস দ্বীপ এখন?
তুই বোধহয় এখন নারীর পাশে বসে রম্ভা, উর্বশীর হিসেবে নিচ্ছিস?
আর আমি কম্পিউটার কিবোর্ড বোতাম টিপছি, জীবন ঘষা-মাজা করছি
বেশ ভালোই আছি
সারাদিন কাজ; রান্নাবান্না নিজেই করি
বাসন মাজি, ঘর গোছাই আবার একটু-আধটু লেখালিখি করি
আবার facebook, whatsapp-এ ঢু মারি
দিন-রাত্রি কাজ আর কাজ-
আর রাত গভীর হলে (শুনলে তুই রাগ করবি)
আমার একলা মন আর আমি একলার সাথে কথা বলি
দিন-রাত্রির খাবারও এখন মেপে খাই
বয়স বেড়ে চলছে…
তোর এসব শুনে হাসি পাচ্ছে, না?
বুঝলি দ্বীপ তোর সাথে দেখা হয় না কতদিন
কিন্তুু! আমার পৃথিবীটাও বদলেছে
আমরা মানে আমরা বন্ধু/সহযোদ্ধারা কেউই আর একসাথে নেই
সকলেই বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো এখন নিজেদের জীবনে
নিজেদের বেঁচে থাকার তাগিদে
মাঝে মাঝে কষ্ট হয় জানিস এমন জীবন চলায়
দ্বীপ তোর মনে আছে সেই তীব্র শীতের রাতে
আমরা একসাথে হেঁটে যাচ্ছিলাম
কিন্তু ভাবিনি সেদিন তোকে একলা রেখে আসতে হবে
আমিও একা এখন কিন্তু তফাৎ হলো
পৃথিবীতে জ্যান্ত থাকার যন্ত্রনাটা মনে হয় মৃত্যুর থেকে বেশি
আজ জানি তুই ঠিক আমার স্বপ্নে আসবি আর হাসবি
বলবি লেখ, লেখ
লিখতে গেলে আমার হাত ভেঙে আসে
তুই বলতিস তোর স্বপ্ন নেই, হাত না হোক, মন দিয়ে লেখতে পারিস
দ্বীপ, আমিও লিখি রে, চোখের জল দিয়ে লিখি তুই পড়তে পারিস না