ভেবেছিলাম আমার হানিমুন হবে সুইটজারল্যান্ডে,
থাকবে বরফে ঘেড়া পাহাড়,
ছবির মতন সাজানো ছোট্ট ছোট্ট জনবসতি,
আর থাকবে ফুল মুন নাইট।
এক কথায় মধু ঝড়ে পড়া গোল চাঁদ।
যার জোৎস্নায় স্নান করব তুমি আর আমি,
হাতে হাত রেখে শপথ নেব একসঙ্গে পথ চলার,
তোমার কাঁধে মাথা রেখে দেখব অনিশ্চয়তার স্বপ্ন।
আর আমরা যে ঘরে থাকব,
সেখানে থাকবে প্রচুর রেড রোজেস,
বড়ো বড়ো কিউট টেডি বিয়ারস,
আর আ্যরোমেটিক ক্যন্ডেল থেকে আসবে মন কেমন করা স্মেল।
খোলা আকাশের নীচে জমিয়ে করব ক্যান্ডেল লাইট ডিনার।
উফফফ্,হাউ রোমান্টিক।
ভাবতেই হাজার প্রজাপতিরা ডানা মেলে উড়ে বেড়াচ্ছে।
আর আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি চেরি ব্লসম গাছ,
যার নীচে তুমি আর আমি পিকনিক করছি।
আর মাথার ওপর পিঙ্ক ফ্লাওয়ার গুলো,
টুপটুপ করে ঝড়ে পড়ছে।
কিন্তু এ সব স্বপ্নই থেকে গেল।
আমাদের যেদিন এনগেজমেন্ট ছিল,
খুব খুশী ছিলে তুমি।
রিং সেরিমনি হয়ে যাওয়ার পর,
প্রচুর ড্রিঙ্কস করলে বন্ধুদের পাল্লায় পরে।
আমার শত বারণেও শুনলে না।
তারপর আমায় নিয়ে বেড়িয়ে পড়লে লং ড্রাইভে।
খুব ভয় ভয় লাগছিল।
কিন্তু তুমি বললে শাহরুখের স্টাইলে,”ম্যা হু না”।
হাইওয়ে দিয়ে ফুলস্পিডে গাড়ি চলছিল,
আর ভেতরে বাজছিল অরিজিৎ সিংএর গান,
“জনম জনম জনম
সাথ চলতা ইয়ুহি।”
নেশাটা একটু একটু করে চাড়া দিচ্ছিল,
তুমি আমার হাত আলতো করে ধরে তাকালে আমার চোখে,
ঠিক সেই মুহূর্তে ই একটা বিশাল লড়ি ধেয়ে আসছিল উল্টোদিক থেকে।
তোমায় সাবধান করার সময় টুকু পেলাম না,
ফলে অঘটন যা হওয়ার হল।
ব্রেক ফেল করে গাড়ি আর লড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ।
জ্ঞান হারাবার আগে অব্দি দেখলাম,
রক্তে ভেসে যাচ্ছে চারিদিক,
তোমার হাতে আমার দেওয়া এনগেজমেন্ট রিং জ্বলজ্বল করছে।
তারপর যখন জ্ঞান ফিরল,
দেখি আমি হুইল চেয়ারে।
তুমি তখন না ফেরার দেশে,
দূর আকাশে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।
আমাদের হানিমুনের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল।