কবিতায় স্বর্ণযুগে দেবারতি গুহ সামন্ত (গুচ্ছ কবিতা)

১| পর্দাফাই
পর্দাটা দুলছে,
খুব আস্তে না,
আবার খুব জোরেও না,
ওই মৃদু মন্থর গতি।
পর্দাটা অনেকদিনের পুরনো,
হঠাৎ কোনো কালবৈশাখী ঝড়ে,
ছিড়ে যাওয়ার সম্বাবনা প্রবল,
রঙটা জ্বলে গেছে।
কি ভাবছ তোমরা??
এটা কোন জানালার পর্দা নয় কিন্তু,
এটা চোখের পর্দা,
চোখের সবচেয়ে মূল্যবান অংশ,
অতিরিক্ত মিষ্টতায় যার রক্তক্ষরণ শুরু।
আচমকা আঘাতে এই পর্দা,
একসময় ছিড়ে গেছিল,
জোড়াতাপ্পি দেওয়া হয়েছে,
কিন্তু বড্ড নড়বড়ে,দুর্বল।
কত ভালো মন্দের স্মৃতিসুধায়,
পরিপূর্ণ পর্দা,
চোখের ওপরের পর্দা নয়,
ভেতরের পর্দা।
পাতলা একটা আস্তরণ……
২| আমি অলোকনন্দা
একটা ছবি আঁকছিলাম,
তারপর হারিয়ে গেলাম।
খুঁজছিলাম নিজেকে,
আবিষ্কার করলাম,
অবাঞ্ছিত এক আমি।
তারা খসা রাতে,
মেঘের পালকে চড়ে,
খুঁজতে বেড়িয়েছি,
মূল্যবান আমিকে।
ঠিক যেমন ছিলাম,
ছবি আঁকার আগে।
সদ্য প্রস্ফুটিত সূর্যমূখী,
ভরা যৌবনে,
যখন একটু একটু করে,
আলোর দিকে বাড়াচ্ছিল হাত,
মিথ্যা আস্ফালনে,
জেগে উঠেছিল আমার অন্তরাত্মা।
পাহাড়ী ঝর্নার বাঁকে,
ফেলে এসেছিলাম নিজেকে,
ঘন অরণ্যের সুবাস,
লেগেছিল আমার,
চোখে,ঠোঁটে,চুলে,
ভাঙছিলাম আমি।
দারুচিনি গাছের ছায়ায়,
বাঁধছিলাম সুখবাসা,
কোথা থেকে উড়ে এলো,
শুকনো একফালি তেজপাতা,
বিকশিত আমার সৌরভ।
চিনতে পারছ কি আমায়?
বলো তো কে আমি?
আমি অলোকনন্দা,
ছবির ভেতর থেকে নিরীক্ষণ করি,
তোমাদের নকল রোজনামচা।