T3 || লক্ষ্মী পুজো || সংখ্যায় দেবযানী ঘোষাল

লক্ষ্মী পূজোর এখন তখন

মেয়েবেলায় দেখতাম মা মাসি আর বাবা লক্ষ্মী পূজোর আগের দিন উপোস করে নাড়ু পাকাতো, গুড় জাল দিয়ে খইতে দিয়ে খই মুড়কি করতো। আর ছাঁচের সাদা সন্দেশ করতো সাদা নারকেল কোড়াতে চিনির পাক দিয়ে। গন্ধে মঁমঁ করতো গোটা বাড়ি। একটা আখ গাছ কিনে আনতো। আমাদের একচক্ষু কৃষ্ণ মুর্তি সরা পূজো হত। কলা গাছের খোল দিয়ে বানাতো বাবা একখানা নৌকা ছুড়ি দিয়ে কেটে কেটে। ভেতরে ছটা গর্ত করে মোড়া বসাতো। ওতে সোনা রূপো আরও কত কি দিত। লুচি সুজি ভোগ দিত আর পাঁচ রকম ফল। সাথে থাকতো কাঁচা মুগ আর ছোলা ভেজানো। পূজো শেষে এই মুগ ছোলা গুড় দিয়ে মাখাষহত। আহা কি অমৃত স্বাদ তার। মায়ের কাছে শিখেছিলাম আলপনা দিতে। আয়না চিরুনি কাঁচা টাকা ধানের ছড়া আঁকতে হত ঘর ভোরে ঘটের চারদিকে গোল আলপনা তো ছিলই। ছিল লক্ষ্মীর পা আঁকা।
বিয়ে হল ব্রাহ্মন পরিবারে। শাশুড়ি হাতে ধরে শিখিয়েছেন ভোগ রান্না। শুকনো আট ভাজা। আবার সব্জি আট ভাজা শশুরবাড়ির বিশেষ নিয়ম। পাঁচমেশালী তরকারি, খিচুড়ি, ফুলকপির তরকারি, পরমান্ন, জলপাই এর চাটনি, লুচি সুজি তো আছেই। শুনেছি শশুর এবং দাদাঠাকুর নিজেই পূজো করতেন। এখন পুরোহিত আনা হয়। এখানে মুর্তি পূজো হয়। প্রতিমা বিসর্জন হয়না। পিছনে পুকুর পাড়ে রাখা হয়। বছর বছর বর্ষার জলে ধুয়ে যায় মাতৃ প্রতিমা। সন্ধ্যেতে নিমন্ত্রন অতিথিরা আসেন। পোলাও আলুরদম ভোগের সব পদের সাথে দেওয়া হয়। দুদিন ব্যাপি কোজাগরী উৎসব পালিত হয় মায়ের আশির্ব্বাদে ধুম ধাম করে।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।