Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

মার্গে অনন্য সম্মান এস কে হাসমত আলী (সেরার সেরা)

maro news
মার্গে অনন্য সম্মান এস কে হাসমত আলী (সেরার সেরা)

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার

পাক্ষিক প্রতিযোগিতা - ২৮ বিষয় - সন্ধিক্ষণ/নতুন আশা

পুনর্জন্ম

নিরু বাবু একজন স্কুল শিক্ষক রুমা দেবী উনার স্ত্রী। উনারা নিঃসন্তান দম্পতি কিন্তু খুব দয়ালু। নিরু বাবু অবসর সময়ে দুস্থ ছাত্র ছাত্রীদের পড়ান তাদের বই খাতা ও কিনে দেন এমনকি আর্থিক সাহায্য করেন।রুমা দেবী ছাত্র ছাত্রীদের সন্তানের মতো স্নেহ করেন।
উনাদের সরল সাধাসিধে জীবন যাপনের সুযোগ আত্মীয়রা ভালো ভাবেই সদ্ব্যবহার করেন।
উনার অবসর কালিন টাকা বিভিন্ন অসুবিধা ও দুঃখ কষ্টের কাহিনী শুনিয়ে হাতিয়ে নেয়।তাতেও নিরু বাবুর কোনো খেদ ছিল না পেনসনের টাকায় চলে যাচ্ছিল।
রুমা দেবীর কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় পরিক্ষায় জানা যায় উনার হার্টের দুটি ভালপ কাজ করছে না শিগগিরই অপারেশন করতে হবে। নিরু বাবু টাকা জোগাড়ের জন্য যেসব আত্মীয় টাকা নিয়েছিলেন তাদের সঙ্গে দেখা করে কিছু কিছু করে টাকা চায় কিন্তু সবাই খালি হাতে ফিরিয়ে দেয়। রুমা দেবী জিঞ্জাসা করলে ছলছল চোখে বলেন জোগাড় করতে পারিনি।
রুমা দেবী হতাশাভরা কন্ঠে বলেন আমি কি আর বাঁচবো না! তুমি বাঁচাতে পারবেনা!চলো আমি তোমার সঙ্গে যাব আমার শরীরের অবস্থা দেখে নিশ্চয়ই উনারা দেবেন।
রুমা দেবীর সুস্থ হয়ে বাঁচার সেই আকুল আকুতি নিরু বাবুর বুকে সজোরে ধাক্কা দিলো। দিনের পর দিন নিরু বাবু টাকার জন্য ঘুরে ঘুরে অবসাদে ভুগে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। কখনো বাড়তে আসেন কখনো আসেন না।
ওদিকে রুমা দেবীর শারীরিক অবস্থার দিনে দিনে অবনতি হতে লাগলো। একদিন নিরু বাবু হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে গেলেন। রুমা দেবী কোনো ক্রমে দরজার সামনে এসে রাস্তার দিকে তাকিয়ে বসে থাকেন প্রতিবেশীরা কেউ খাবার দিলে খান না দিলে ক্ষুধা চেপে চুপচাপ পড়ে থাকেন। মৃত্যুর দিন গোনা ছাড়া কিছু উপায় ভাবতেই পারেন না।
একদিন হঠাৎ নিরু বাবু দেখেন উনি এক হসপিটালের বেডে শুয়ে আছেন। তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন কিন্তু একটা ডাক্তার সামনে এসে দাঁড়ায়। ডাক্তারবাবু বলেন স্যার আমাকে চিনতে পারছেন ? আমি সায়ন বাবা মারা যাবার পর আপনার ই দানে খেয়ে পড়ে পড়াশোনা করে বড়ো হয়েছি। আপনি না থাকলে আমি কোথায় হারিয়ে যেতাম।
হারু বাবু - সব ঠিক আছে সায়ন তুমি আমাকে ছেড়ে দাও বাড়িতে যেতেই হবে তোমার জেঠিমার শরীর খুব খারাপ।
সায়ন - চিন্তা করবেন না স্যার, আপনাকে রাস্তায় অগোছালো ভাবে ঘুরতে দেখে আমার গাড়িতে আপনাকে তুলে এনে চিকিৎসা করার সময় সব খোজ খবর নিয়ে জেঠিমার কে এনে নিজের হাতে অপারেশন করেছি এখন ভালো আছেন। আপনাদের নিয়ে আমার বাড়িতে যাবো আপনারা সেখানেই থাকবেন।
গাড়িতে যেতে যেতে সায়ন রুমা দেবীকে বলে জেঠিমা আমি অভুক্ত অবস্থায় পড়তে এলে আপনি আমাকে জোর করে খাইয়ে দিতেন মনে আছে কি ? আমি বাড়িতে গিয়ে কিন্তু আজকে আপনার হাতেই খেতে চাই ।
এই সন্ধিক্ষণে নিরু বাবুর চোখ চিকচিক করে উঠে ভাবেন সহমর্মিতা, কৃতজ্ঞতা ,মানবতা এখনো বেঁচে আছে বলেই পৃথিবী এতো মধুর, জীবন এতো মধুময় ! বুকে নতুন আশা নিয়ে নিরু বাবু সায়নের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register