Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাসে সমীরণ সরকার (পর্ব - ৫৯)

maro news
ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাসে সমীরণ সরকার (পর্ব - ৫৯)

সুমনা ও জাদু পালক

চন্দ্রকান্তা বললো, রাজকুমারী রত্নমালা, চলো এবার এগুনো যাক সামনে। বেগুনি রংয়ের পরীর পালক কি বলে গেল মনে আছে তো? ----কী? ----- এখন থেকে আমাদের চোখ কান খোলা রেখে কাজ করতে হবে । বাইরে থেকে কোন সাহায্য আর পাবো না আমরা। সুমনা নিরুত্তর। অদৃশ্য কন্ঠ বললো, এখন আমাদের প্রধান কাজ হূডুর প্রাসাদ খুঁজে বের করা আর তার ভিতরে প্রবেশ করার পথ খোঁজা। সুমনা বলল, একটা কথা আমার মনে হচ্ছে। -----কী? -------- এই যে আমরা নীল ধোঁয়ার প্রাচীর, বেগুনি পাহাড় ইত্যাদির বাধা কাটিয়ে হূডুর রাজ্যে ঢুকে পড়েছি এ খবরটা কী হূডু জানতে পেরেছে? ------ হয়তো পেরেছে, কিন্তু তাতে কি? ভয় পেয়ো না একদম। চন্দ্রকান্তা বললো,জাদুকরদের তো মায়া মুকুর থাকে, তার সাহায্যে ঘরে বসে সব দেখতে পায় ওরা। সে যা হওয়ার হোক ,চলো এবার । আবার দুধরাজের পিঠে উঠে বসে ওরা। দুধরাজ দুলকি চালে চলতে শুরু করে। কিছুটা যাওয়ার পর একটা বড় জঙ্গলের ধারে এসে পৌঁছায় ওরা। হঠাৎ রাজকুমারী চন্দ্রকান্তা চাপা গলায় বলে, বন্ধু রত্নমালা, ওই দেখো হূডুর পাহারাদাররা আমাদের খোঁজে এসেছে। ----- কোথায়? দূরে আকাশের দিকে আঙ্গুল নির্দেশ করে চন্দ্রকান্তা বলল, ওই দেখো, মস্ত বড় একটা পাখির পিঠে চেপে একজন আকাশ পথে এদিকেই আসছে।ওরা অবশ্যই আমাদের খুঁজতে এসেছে। তার মানে আমি যা বলছিলাম ,হয়তো সেভাবেই হূডু ঘরে বসেই আমাদের গতিবিধির উপর লক্ষ্য রাখছে। সুমনা আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখতে পেল, সত্যিই কেউ একজন বস্তু বড় একটা পাখির পিঠে চেপে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু অত বড় পাখিটার পিঠে বসে আছে ওটা কে? ওটার আকৃতি মানুষের মতো হলেও ওটাকে একটা পুতুলের মত লাগছে। সে যাই হোক, হূডু চর পাঠিয়েছে মানে যেকোনো কারণেই হোক, হূডু এখন দেখতে পাচ্ছে না তাদের। তাই তাদের খোঁজে পাহারাদার পাঠিয়েছে। কিন্তু এক্ষুনি ধরা দিলে চলবে না। সুমনা দুধরাজের কানে কানে বলল, বন্ধু দুধরাজ, চলো ওই জঙ্গলের ভিতরে লুকিয়ে পড়িথথথথথথত আমরা। দুধরাজ একটু দ্রুত পায়ে চলে ঢুকে পড়লো জঙ্গলের ভিতরে। ভিতরে ঢুকেই অবাক হওয়ার পালা ওদের। বাইরে থেকে যেটাকে জানা-অজানা নানা বড় বড় গাছের জঙ্গল মনে হচ্ছিল, ভিতরে ঢুকে দেখল ,সেটা একটা মস্ত ফলের বাগান। আপেল, নাশপাতি, কমলা, খেজুর, লাল রঙের মোটা মোটা কলা আরো হরেক ফলের গাছ ভর্তি হয়ে আছে ফলে। কিন্তু লতা পাতা, ঝোপঝাড় আর দীর্ঘকাল অযত্নের ফলে বেড়ে ওঠা অজস্র আগাছায় ফলের গাছগুলোকে এমন ভাবে চেপে ধরেছে যে, দেখে জঙ্গল মনে হচ্ছে। চন্দ্রকান্তা হাত বাড়িয়ে একটা লাল টুকটুকে আপেল ছিঁড়ে খেতে শুরু করলো। হঠাৎ ওরা দেখতে পেল, অনতিদূরে একটা খেজুর গাছের গোড়ায় কেউ একজন তাদের দিকে পিছন ফিরে উবু হয়ে বসে কী যেন করছে। সুমনার নির্দেশ মত দুধরাজ লোকটার পিছনে গিয়ে দাঁড়াল। লোকটা সম্ভবত শব্দ পেয়ে চমকে উঠে দাঁড়িয়ে ঘুরে ওদের দেখেই কেমন যেন ভয় পেয়ে গেল। ওর চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ। সুমনা ও চন্দ্রকান্তা অবাক হয়ে দেখলো, লোকটা একটা বামন। বিচ্ছিরি দেখতে। ওর ডান চোখের নিচে একটা বড় কালো জরুল মুখটাকে কিম্ভূতকিমাকার করে তুলেছে। লোকটার পিঠে একটা মস্ত বড় কুঁজ থাকায় ও সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছে না। চলবে
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register