Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাসম্পাতে সিদ্ধার্থ সিংহ (পর্ব - ৪২)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাসম্পাতে সিদ্ধার্থ সিংহ (পর্ব - ৪২)

দেবমাল্য

ও কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না। বুঝতে পারছে না, গতকাল রাতে তানিয়াকে যে ট্রেনে তুলে দিয়ে গিয়েছিল সামশের, সেই ট্রেন স্টেশনে আসার আগেই একটা কালো জিপে করে তার সামনে দিয়ে তানিয়া হুস করে বেরিয়ে গেল কী করে! ও কি উড়ে এসেছে! না, এটাও সে ভুল দেখেনি। ওটা তানিয়াই ছিল। আর গতকাল রাতে হোটেলের ঘরে শুয়ে শুয়ে টিভি দেখার সময় পর পর গুলির শব্দ শুনে,  জানালা দিয়ে ও যাদের ল্যাম্পপোস্টের নীচে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিল, দেখেছিল তার জানালার দিকে হা করে তাকিয়ে থাকতে, সে-ই বোরখা পরা দু'জন মহিলাই বা তানিয়ার জিপে এল কী করে! এদের কী করে যোগাযোগ হল ওর সঙ্গে! কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না সে। সে যত দূর জানে, এখানকার কাউকেই তানিয়া চেনে না। জানে না। তা হলে! যত ভাবছে, ততই তার ভাবনা তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। কিছুতেই মেলাতে পারছে না। গাড়ির একদম সামনে চালকের পাশে বসে আছে সে। হঠাৎ সামনে তাকিয়ে সে একেবারে চমকে উঠল। এই গাড়িটা এখানে এল কী করে! এটা তো তার বাবার গাড়ি। হ্যাঁ, ওই তো ডাবলিউ বি জিরো ফোর... হ্যাঁ হ্যাঁ, এটাই তো তার বাবার গাড়ি। কিন্তু... নাঃ, তার মাথাটা বোধহয় এক্কেবারে গেছে। তাই ভুলভাল দেখছে সে। তাই চালককে সে আর গাড়ি দাঁড় করাতে বলল না। অথচ গাড়ির গতি কমিয়ে ওই গাড়িটার সামনেই তাদের গাড়িটাকে দাঁড় করিয়ে দিল চালক। দেবমাল্য বলল, কী হল? চালক বলল, এক মিনিট। একটু আসছি। তখন বললাম না... এই নার্সিংহোমে আমাদের একজন ভর্তি আছে। তাকে একটা ওষুধ পৌঁছে দিতে যাচ্ছি। যাব আর আসব। বলেই, স্টিয়ারিংয়ের সামনে রাখা একটা সাদা রঙের পলিপ্যাক নিয়ে সে নেমে গেল। যাওয়ার সময় জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে ফের বলল, এক্ষুনি আসছি। দেবমাল্য বলল, ঠিক আছে। চালকটি হনহন করে চলে যেতেই দেবমাল্য জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখল, বাঁ হাতেই একটা বড় বাড়ি। তার ওপরে একটা বিশাল সাইনবোর্ডে বড় বড় হরফে লেখা--- মুর্শিদাবাদ নার্সিংহোম। তার নীচে লেখা--- বানজেটিয়া, বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ। দেবমাল্য মাথা নাড়ল, তার মানে এই জায়গাটার নাম--- বানজেটিয়া। চালকটি বলে গেল এক মিনিট, কিন্তু অনেকক্ষণ তো হয়ে গেল! কখন আসবে কে জানে! রণো হলে নিশ্চয়ই এরকম করত না। ও বেশ সিনসিয়ার। না হলে তার কী দায় পড়েছিল, হতে পারে ও তার একজন সওয়ার। কিন্তু ও তো তার নিজের কেউ না। দীর্ঘদিনের পরিচিতও না। তবু একজন অচেনা-অজানা লোক তার বউকে খুঁজতে গিয়ে ট্রেনের কামরার মধ্যে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল দেখে, তাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল ও। কী হল রে বাবা! বড্ড দেরি করছে তো ছেলেটা! রাজীববাবুর কথামতো ওদিকে তার বউ যদি হোটেলে গিয়ে থাকে, আর ওখানে গিয়ে যদি তাকে না পায়, তা হলে যে সে কী করবে, কে জানে! মোবাইলে হয়তো ফোন করবে। কিন্তু তার মোবাইলটা তো... ধ্যাত, আর ভাল্ লাগছে না। কেন যে এখানে মরতে এসেছিলাম!
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register